করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরনের স্বীকৃতি পাওয়া ওমিক্রনের বিস্তার ঠেকাতে সপ্তাহিক ছুটির দিন কারফিউ জারি করেছে দিল্লির রাজ্য সরকার। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতি শনি ও রোববার কারফিউ চলবে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায়।
করোনার ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষত সারিয়ে উঠতে থাকা ভারতে ফের উর্ধ্বমুখী হয়েছে দৈনিক সংক্রমণের হার। মঙ্গলবার যেদিন দিল্লির রাজ্য সরকার এই আদেশ জারি করল, সেইদিনই দেশটিতে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৩৭৯ জন, যা গতবছর সেপ্টেম্বরের পর ভারতে সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণের রেকর্ড।
দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ শনি এবং রোববার কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইসঙ্গে জরুরি পরিষেবা ছাড়া সরকারি সব দফতরের কর্মীদেরকে বাড়ি থেকে কাজ কোর নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তবে, বেসরকারি সংস্থাগুলো ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ চালাতে পারবে।
মণীশ আরও জানান, বাস স্টপেজ ও মেট্রো স্টেশনে ভিড় এড়াতে বাস এবং মেট্রোয় আসন সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রকাশ্যে কেউ মাস্ক ছাড়া বের হতে পারবেন না।
গত বছর ভারতে যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছিল, রাজধানীতে গণপরিবহন সর্বাধিক বহন ক্ষমতার পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল করছিল।
ওমিক্রনের কারণে বর্ষবরণে দিল্লিতে বন্ধ ছিল জমায়েত; কিন্তু তারপরও গত এক সপ্তাহে দিল্লিতে সংক্রমণের হার বাড়ছে। প্রতিদিনই সেখানে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন ৪ হাজারের বেশি মানুষ। সোমবার রাজধানীতে শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৯৯ জন।
দেশটির টিকাদান কর্মসূচীর কর্তৃপক্ষ ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি গ্রুপের (এনটিজিআই) প্রধান ডা. এনকে অরোরা ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবে দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতাসহ ভারতের বড় শহরগুলোতে লাগামহীনভাবে বাড়ছে দৈনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আক্রান্ত এই রোগীদের ৭৫ শতাংশই ওমিক্রনের শিকার।
কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। মঙ্গলবার এক টুইটবার্তায় কেজরিওয়াল বলেন, ‘আমি করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ হয়েছি। শরীরে মৃদু উপসর্গ রয়েছে। করোনা শনাক্ত হওয়ার পর বাড়িতেই আইসোলেশনে আছি। গত কয়েকদিনে যারা আমার সংস্পর্শে এসেছিলেন, তারা দয়া কয়ে আইসোলেশনে থাকুন এবং করোনার পরীক্ষা করান।’