টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্য নিয়ে আজ ওমানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। মাসকটের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে গ্রুপ ‘বি’তে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সহ-আয়োজক ওমানের বিপক্ষে ম্যাচটি টাইগারদের জন্য বাচা-মরার লড়াই। টাইগারদের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় শুরু হবে এবং ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্সে।
বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় ম্যাচটি হবার কথা ছিলো সুপার টুয়েলভ নিশ্চিতের, কিন্তু এখন বাংলাদেশের পিঠ দেয়ালে। মূলপর্বে খেলতে হলে পরের দুই ম্যাচে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। কারণ নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে গেছে টিম বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে স্লো উইকেটে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। এই ধরনের উইকেটে খেলে বিশ্বকাপে জ্বলে উঠা যাবে না বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলতে গেল ‘ফলস কন্ডিশন’ নিয়ে।
২০১২ সালে এই ফরম্যাটে প্রথম মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ ও স্কটল্যান্ড। সে ম্যাচটি জিতেছিলো স্কটল্যান্ড। এবারও বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিলো স্কটিশরা। ৫৩ রানে ৬ উইকেট পতনের পরও ৯ উইকেটে ১৪০ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় স্কটল্যান্ড। এরপর বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে ১৩৪ রানে আটকে রাখে স্কটিশরা।
এ ম্যাচের উইকেট ছিল পুরোপুরি ব্যাটিং সহায়ক। কিন্তু মন্থর গতির ব্যাটিংয়ের কারণে ব্যাটি বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সাকিব-মুশফিকের আউটের পরও উইকেটে মাহমুদউল্লাহ থাকায় বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ নিজেও ধীর গতিতে ব্যাট করেছেন। তবে এই ধরণের উইকেটে তাদের আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে হবে বলে স্বীকার করেছেন মাহমুদউল্লাহ।
প্রথম ম্যাচে হারের জন্য ব্যাটিংকে দুষলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ওমানের বিপক্ষে ‘বাঁচা-মরার’ ম্যাচে তাই পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের ব্যাটিং উদ্বেগের বিষয়। আমাদের আরও ভালো ব্যাটিং করতে হবে। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন আমাদের আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে হবে। ব্যাটিং লাইন-আপে নয় নম্বরে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন পর্যন্ত আমাদের ব্যাটিং গভীরতা আছে। আগামীকাল আমাদের কিছু পরিবর্তন নিয়ে ভাবতে হবে।’
মাহমুদউল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে ধীর গতিতে ব্যাট করিনি। আমরা বাউন্ডারি মারতে পারিনি। পরের বার আমাদের আরও ভালো ব্যাটিং করতে হবে। ম্যাচ হারার পর অনেক কিছুই উঠে আসবে। আমি মনে করি আমরা আজ ভালো খেলিনি, কিন্তু আমরা একটি ভালো টি-টোয়েন্টি দল। আমাদের সামর্থ্য আছে। আমরা যখন আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলি, আমরা ম্যাচ জিততে পারি।’
এখন পর্যন্ত ওমানের বিপক্ষে একবারই মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাছাই পর্বের রাউন্ডে ওমানকে বৃষ্টি আইনে ৫৪ রানে হারিয়েছিল টাইগাররা। ব্যাট হাতে ৬৩ বলে ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তামিম ইকবাল। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের পক্ষে এটিই একমাত্র সেঞ্চুরি। তবে এবারের বিশ্বকাপে দলে নেই তামিম। নিজ থেকেই বিশ্বকাপ দল থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি।
মূল বিশ্বকাপে উঠার আগে টানা তিন ম্যাচ হারে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে। শ্রীলংকা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দু’টি অফিসিয়াল ম্যাচের পর এবার বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের কাছে হার। অন্যদিকে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে ওমান। নিজেদের কন্ডিশনে খেলার কারণে ঘরের সুবিধা নিয়েছে তারা। তবে সুপার টুয়েলভে খেলা নিয়ে চিন্তায় পড়লেও, কোন প্রকার ছাড় দিতে রাজি নন মাহমুুদউল্লাহ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স আশানুরুপ নয়। এখন পর্যন্ত ১১৪ ম্যাচে ৪১টি জিতেছে তারা। ৭১ ম্যাচে হার ও দু’টি পরিত্যক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে ২৬ টি ম্যাচ খেলেছে এবং মাত্র পাঁচটিতে জিতেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল:
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নুরুল হাসান সোহান, শামীম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, রুবেল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ ও তাসকিন আহমেদ।