ঐতিহ্য’র লড়াইয়ে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ২-২ গোলে অমিমাংসীতভাবে শেষ হয়েছে। প্রিমিয়ার বিভাগের চ্যাম্পিয়ন ফাইট থেকে আগেই ছিটকে পড়ে ছিল আবাহনী। কিন্তু মোহামেডান ছিল ফাইটে। দু’পয়েন্ট হারানোয় এখন তাদের উইনার্সের পরবর্তী ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) জেলা স্টেডিয়ামে বিকেল সোয়া ৪টায় জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন খুলনা আয়োজিত এবং বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লীগে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি খুলনা আবাহনী ক্রীড়া চক্র ও মোহামেডান ম্পোটিং ক্লাব।
ঐতিহ্য’র লড়াইয়ে মোহামেডানের প্রয়োজন ছিল জয়। পক্ষান্তরে আবাহনীও ছাড়তে রাজি নয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে। ফলে উভয় দলই জয়ের আশায় খেলার শুরুতেই আক্রমনে যায়। এসময় উভয় দলের খেলোয়াড়রা বেশ কয়েকটি গোল মিস করে। বৃষ্টির কারণে মাঠ ভারী হওয়ায় খেলোয়াড়রা তাদের স্বাভাবিক খেলা উপহার থেকে বঞ্চিত হয়। এরপরও আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্যে দিয়ে চলে খেলা। খেলার ২৫ মিনিটের সময় আবাহনী লেফ্ট ব্যাক বামপ্রান্ত থেকে বল বড় ডি বক্সের মধ্যে লব করলে স্টাইকার রাজুকে মারাত্মক ফাউল করে মোহামেডানের ডিফেন্স। সাথে সাথে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারী জুনায়েদ শরীফ। পেনাল্টি থেকে আবাহনীর ২০নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় পিয়াস গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় (১-০)।
কিছুক্ষণ পর আবাহনীর ৩নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় শাহীন দু’টি হলুদ কার্ডের কারণে মাঠ থেকে বের হয়ে যান। ফলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় আবাহনী। গোল হজম করে পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে মোহামেডান। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে তারা। তবে আবাহনী রক্ষণভাগ ভাঙ্গতে ব্যর্থ হয়। পিছিয়ে থেকে বিরতীতে যায় মোহামেডান। বিরতীর পর আক্রমণ শুরু করে মোহামেডান। একের পর এক আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে আবাহনী। তখন তারা গোল ঠেকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। দ্বিতীয়ার্ধের ৬ মিনিটে মোহামেডানের ১৭নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় আজমির গোল করে দলকে সমতায় আনে (১-১)।
কিন্তু ৫১ মিনিটের সময় দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম আক্রমণ থেকে মোহামেডানের ডিফেন্সের ভুলে আবাহনীর ৯নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় রাজু গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় (২-১)। ৫৩ মিনিটে মোহামেডানের একটি সহজ গোল আবাহনীর গোলকিপার লালু ঝাপিয়ে পড়ে রক্ষা করলে হাতে আঘাত পেয়ে মাঠে পড়ে থাকে। এসময় গ্যালারী থেকে উত্তেজিত দর্শকরা মাঠে প্রবেশ করে। সাথে সাথে পুলিশ গিয়ে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নেয়। প্রায় ১২ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। আবারও খেলা শুরু হলে পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে মোহামেডান। ৭১ মিনিটে মোহামেডানের ৯নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় পুষ্পক গোল করে দলকে সমতায় আনে (২-২)। সমতায় ফিরে জয় নিশ্চিতে মোহামেডান আক্রমন তীব্র করে। ভাগ্য সহায়তা না পাওয়ায় তাদের অনেকগুলো সহজ গোল আবাহনীর কিপার লালু প্রতিহত করে। এছাড়া দু’টি দুরপাল্লার সর্ট লালু পরাস্ত হলেও বারে লেগে ফিরে যায়। এদিন মেহামেডানের জয় রুখতে গোলকিপার লালুই দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়। তার অসাধারণ দক্ষতায় আবাহনী ড্র করে। শেষ বাঁশি বাজার আগে উভয় দল আর কোন গোলের সুযোগ না পাওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। খেলাটি পরিচালনা করেন রেফারী জুনায়েদ শরীফ, আব্দুর রহমান ঢালী, আলী আকবর ও মাহবুবুর রহমান। ম্যাচ কমিশনার ছিলেন নৃপেন রায় চৌধুরী।
দিনের প্রথম ম্যাচে দুুপুর আড়াইটায় মুখোমুখি হয় ডুমুরিয়া তরুন সংঘ বনাম দিঘলিয়া ওয়াইএমএ। খেলার ১৭ মিনিটের সময় একটি গোলকে কেন্দ্র করে দিঘলিয়া ওয়াইএমএ’র খেলোয়াড়রা মাঠ থেকে বের হয়ে যায়। এরপর প্রায় ২৫ মিনিট রেফারী পারভেজ আলম অপেক্ষা করলে দিঘলিয়া মাঠে না ফেরায় খেলা সমাপ্ত করেন। এসময় ডুমুরিয়া তরুন সংঘ ১ গোলে এগিয়ে ছিল। ১৭ মিনিটে দিঘলিয়ার ফরোয়ার্ড অফসাইডে গোল করলে তা নিয়ে তির্কের সৃস্টি হয়। খেলাটির মনোমুগদ্ধকর ধারাভাষ্য ছিলেন এডভোকেট এম এম সাজ্জাদ আলী ও এডভোকেট প্রজেশ রায়।
মাঠে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম, জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী মোতালেব মিয়া, ডিএফএ সহ-সভাপতি গোলাম রহমান বাবু, সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী, কার্যনির্বাহী সদস্য ও লীগ কমিটির সম্পাদক সুজন আহমেদ এবং সদস্য ও লীগ কমিটির সহ-সম্পাদক মনিরুজ্জামান মহসীন ও সদস্য জামিল আকতার লেলিন। ১৪ আগস্ট রবিবার জেলা স্টেডিয়ামে দু’টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। দিনের প্রথম ম্যাচে দুুপুর আড়াইটায় মুখোমুখি হবে টাউন ক্লাব বনাম ইয়ং রেডসান ক্লাব। বিকেল সোয়া ৪টায় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিদ্ব ন্দ্বিতা করবে উল্কা ক্লাব বনাম সাবেক খেলোয়াড় সংঘ।