বিজয়ীর কাছে পরাজিতরা নিরাপদ থাকলে বিজয়ের আনন্দ মহিমান্বিত হয় উল্লেখ করে বিজয়ের ঐতিহাসিক মুহূর্ত শান্তভাবে উদযাপনের আহবান জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ছাত্র-জনতাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, হাজারো তাজা প্রাণের বিনিময়ে জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার পতন হয়েছে। রাহুমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। জনতা বিপ্লবের প্রথম ধাপ চূড়ান্তভাবে সফল হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বিকালে খুলনা নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্ত্বরে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির আয়োজনে ছাত্র-জনতার বিজয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, শত সহস্র শহীদের রক্তের বিনিময়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। বিশ^ নতুন বিজয় দেখেছে। খুনি হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে দেশের জনগণ গণতন্ত্র, তাঁদের ভোটের অধিকারের পথ সুগম করেছে। সংখ্যালঘুদের উপাসনালয় ও বাড়িঘর রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে বিএনপি ও অঙ্গ দলের নেতাকর্মীদেও প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ছাত্র-জনতার বিজয় নস্যাতে আওয়ামী লীগ চক্রান্ত করছে অভিযোগ করে হেলাল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, বিজয়-পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু ও বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর প্রতি জুলুম-নির্যাতন শুরু করেছে, তাদের আক্রমণ করে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানো, জান-মাল রক্ষা করার আহবান জানান।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, স. ম. আ. রহমান, সৈয়দা রেহেনা ইসা, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, মাহাবুব হাসান পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, শেখ সাদী, হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ, ফকরুল আলম, হাফিজুর রহমান মনি, সাহিনুল ইসলাম পাখি, কেএম হুমায়ন কবির, সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান পরাগ, কাজী মিজানুর রহমান, এ্যাড. চৌধুরী তৌহিদুর রহমান তুষার, একরামুল হক মিল্টন, নাজির উদ্দিন নান্নু, শেখ ইমাম হোসেন, এ্যাড. মোঃ আলী বাবু, শেখ জামাল উদ্দিন, আবু সাইদ হাওলাদার আব্বাস, আফসার উদ্দিন, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, আনসার আলী, নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, মিজানুর রহমান মিলটন, শফিকুল ইসলাম শফি, আক্কাস আলী, ফারুক হোসেন, আজিজা খানম এলিজা প্রমুখ।
পরাজিত শক্তি খুলনার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত : মনা
খুলনা মহানগর বিএনপি আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা খুলনার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য ‘পরাজিত শক্তিকে’ দায়ী করে বলেন, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে পরাজিত শক্তি। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। যখন ফ্যাসিস্ট বিতাড়িত হয়েছে, তখন মানুষের সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও ভাঙচুর শুরু করে। এর সঙ্গে বিএনপি, ছাত্র-জনতার নূন্যতম সম্পর্ক নেই। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য খুলনা মহানগর ও জেলার প্রত্যেক জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীদের অবস্থান নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরাজিত শক্তি এখন মুখোশ পাল্টে সাধারণ ছাত্র-জনতার ভেতর ঢুকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু ছাত্র-জনতা যেভাবে একটি ফ্যাসিস্ট সরকারকে প্রতিরোধ করেছে, সেভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের জন্য দায়ী ব্যক্তিদেরও প্রতিহত করবে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিএনপি কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিং এ তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের জন্য দায়ী ব্যক্তিদেরও প্রতিহত করবে।
খুলনার পরিবেশ শান্ত রাখার জন্য মঙ্গলবার বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালের নেতৃত্বে দিনভর পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক করা হয়েছে। যেখানে ভাঙচুর সেখানেই আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। এছাড়া সদর থানা, খানজাহান আলী থানা, খালিশপুর থানা, দৌলতপুর থানা, সোনাডাঙ্গা থানার বিভিন্ন ধর্মীয় উপসানালয়, বাড়ি ঘর পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রেসব্রিফিং এ বলা হয়েছে বিএনপির সদর থানার সদস্য সচিব মোল্লা ফরিদ আহমেদ এর নেতৃত্বে হেলাতলা সোনাপট্টি পাহারা বসানো হয়েছে।
প্রেসব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, বেগম রেহেনা ঈসা, কাজী মাহমুদ আলী, বদরুল আনাম খান, শেখ সাদী, ফখরুল আলম, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান পরাগ, আবু সাইদ হাওলাদার আব্বাস, সাইদ হাসান লাভলু, অ্যাড. চৌধুরী তৌহিদুর রহমান তুষার, একরামুল কবীর মিল্টন, শেখ জামাল উদ্দিন, আফসার উদ্দিন, মিজানুর রহমান মিলটন, আসাদুজ্জামান আসাদ, মুনতাসির আল মামুন প্রমুখ।
জামিনে মুক্ত: খুলনা জেলা কারাগার মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক ইস্তিয়াক আহমেদ ইস্তি, মহানগর কৃষকদলের আহবায়ক সজিব তালুকদারসহ ৬৪জন কারামুক্ত হয়েছেন।