খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম মারা গেছেন
  ভারতে হাসপাতালে আগুন লেগে ১০ শিশুর মৃত্যু

এস আলমের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দেওয়া হবে : গভর্নর

গেজেট ডেস্ক

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, এস আলম বিশ্বের ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি যে, পরিকল্পিতভাবে ব্যাংক লুট করেছে। এভাবে পৃথিবীতে কেউ ব্যাংক ডাকাতি করেছে কি-না জানা নেই। এখন তার নামে–বেনামে থাকা সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। ফলে এ মুহুর্তে এস আলমের সম্পদ যেন কেউ না কেনে।

আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিগত সরকারের বিশেষ আনুকূল্যে এস আলম গ্রুপের দখলে ছিল ৭টি ব্যাংক। এসব ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে–বেনামে অন্তত ২ লাখ কোটি টাকা বের করে তার বেশিরভাগই পাচার করেছে। সরকার বদলের পর ব্যাংকগুলোর পর্ষদ ভেঙে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার তার নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ব্যাংকের পর্ষদ ভাঙা হয়েছে। এছাড়া তার মামাতো ভাই সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ পরিবারমুক্ত করা হয়েছে ইউসিবি। এর আগে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ও ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ এস আলমমুক্ত করা হয়। এছাড়া তার শেয়ার বিক্রি ও ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনে বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়েছে। আর শতভাগ মার্জিন ছাড়া এলসি না খোলাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকে বন্ধক নেই এমন সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করছে এস আলম গ্রুপ এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, এটা আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে। সম্পদ বিক্রি যেন করতে না পারে সেজন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বলব। এ মুহূর্তে তাদের সম্পদ যেন কেউ না কেনে। এ সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, গ্রাহকদের বলব, ধৈর্য ধরেন। একবারে সবাই টাকা তুলতে যাবেন না। তাহলে ব্যাংক টাকা দিতে পারবে না। অনেকে অতিরিক্ত সুদের লোভে টাকা ব্যাংকে রেখেছেন। এখন অধৈর্য হলে হবে না। আমানতের টাকা লস হবে এটা আমরা চাই না। তবে আমরা ছাপিয়ে আর কোনো টাকা দেব না। কারণ সেটা জাতির জন্য ভালো হবে না। তখন মূল্যস্ফীতি ১০০ শতাংশ হয়ে যাবে। যেটুকু টাকা না তুললে নয়, সেটা তোলেন। আগামী ৫–৬ মাসের মধ্যে অবস্থা পরিবর্তন হবে। বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত কোনো আমানতকারীর টাকা খোয়া যায়নি।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ডলারের দর যেহেতু একটা স্থিতিশীল পর্যায় আছে, এমন পর্যায় থাকলে আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। বন্যা যদিও একটু দুশ্চিন্তা তৈরি করেছে। তবে এটাও দ্রুত ঠিক হয়ে আসবে বলে আশা করা যায়। তিনি আরও বলেন, রিজার্ভ থেকে এখন ডলার বিক্রি করা হচ্ছে না। তাই রিজার্ভ কমার আশঙ্কা নেই। সরকারের চাহিদা আন্তঃব্যাংক বাজার থেকে মেটানো হচ্ছে।

ব্যাংকিং কমিশন গঠন নিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংকিং কমিশন গঠন করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক সেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মাস খানেকের মধ্যে এটা করা হবে। বিদেশি এক্সপার্ট নেওয়া হবে। শ্রীলঙ্কা কীভাবে করেছে সেটাও দেখা হবে। তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকের নতুন পর্ষদকে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ম পরিকল্পনা দিতে বলা হয়েছে। এখানে কাজ করতে হবে, বসে থাকার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক সব ধরনের সহায়তা করবে। তারা সহায়ক ভূমিকা পালন না করলে পর্ষদ আবার পরিবর্তন করা হবে। সবাইকে নজরদারি করা হচ্ছে। অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

সাবেক দুই গভর্নরের বিষয় তিনি বলেন, এখানে সুশাসনের অভাব ছিল। সামনে যে হবে না তেমন নয়। তবে আমার হাত দিয়ে খারাপ কিছু হবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও সংস্কার করতে হবে। কারণ তারাও দায় এড়াতে পারে না।

এস আলম ছাড়া ব্যাংক খাতে আরও যেসব মাফিয়া রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ বিষয়ে জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, অন্যদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হবে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!