সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন (৩০) হত্যার ঘটনায় আরো দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে বুধবার (২৫ নভেম্বর) তাদের বরখাস্ত করা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাময়িক বরখাস্তকৃতরা হলেন-সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সৌমেন মৈত্র ও রায়হান হত্যা মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল বাতেন।
তিনি বলেন, আককবরকে পালাতে সহযোগিতা করার অপরাধ খোঁজে বের করতে পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এই দুইজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে এ ঘটনায় বন্দরবাজার ফাঁড়ির টু-আইসিকে এসআই হাসানকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিলো। এছাড়া এর আগে তিন পুলিশ সদস্য এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস এবং হারুনুর রশীদকে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলে তাদের বরখাস্ত করা হয়।
গত ১১ অক্টোবর ভোরে রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। পরে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।
রায়হান ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হলেও নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ ছিল পুলিশ ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরিবারের অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তদন্ত দল ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর সত্যতা পেয়ে জড়িত থাকায় ইনচার্জ আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন।
বরখাস্তকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন। ঘটনার পর অন্য ছয়জন পুলিশ হেফাজতে থাকলেও আকবর পলাতক ছিলেন।
গত ১০ নভেম্বর সকালে খাসিয়াদের সহযোগিতায় বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেনকে কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিদের হাতে তুলে দেয় ভারতীয় খাসিয়ারা। খবর পেয়ে পোশাকে-সাদা পোশাকে পুলিশ ঘটনাস্থল ডোনা সীমান্ত এলাকা পৌঁছালে জনতা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
খুলনা গেজেট/কেএম