দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পদ ছেড়েছেন ৫০ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এ নিয়ে পদত্যাগ করা জেলা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। স্থানীয় সরকার বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, বুধবার (২৯ নভেম্বর) পর্যন্ত জেলা পরিষদের চারজন চেয়ারম্যান, একজন সদস্য এবং উপজেলা পরিষদের ৫০ জন চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন।
জানা যায়, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিকল্প প্রার্থী রাখার কথা বলায় এবং বিএনপিবিহীন নির্বাচনে সহজে জয়ের আশায় তারা পদত্যাগ করেছেন। অবশ্য আওয়ামী লীগ নেতারা গত মঙ্গলবার জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইচ্ছেমতো হওয়া যাবে না। এতে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখা কেউ কেউ নতুন করে ভাবছেন যে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন কি না।
আইন অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়। তারা নির্বাচনে জয়ের আশা করছেন বলেই পদত্যাগ করছেন বলে জানা গেছে।
জেলা পরিষদের যাঁরা পদত্যাগ করেছেন
পদত্যাগ করা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা হলেন সিরাজগঞ্জের আবদুল লতিফ বিশ্বাস, হবিগঞ্জের মুশফিক হুসেন চৌধুরী, কুড়িগ্রামের জাফর আলী ও লালমনিরহাটের মতিয়ার রহমান। যশোর জেলা পরিষদের সদস্য আজিজুল ইসলামও পদত্যাগ করেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বরিশালের বাকেরগঞ্জের মোহাম্মদ শামসূল আলম, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর মো. আলী আসলাম, গাইবান্ধা সদরের শাহ সারোয়ার কবীর, নীলফামারীর সৈয়দপুরের মোখছেদুল মোমিন, রংপুরের মিঠাপুকুরের জাকির হোসেন সরকার, খুলনার ফুলতলার শেখ আকরাম হোসেন ও কুষ্টিয়ার মিরপুরের কামারুল আরেফিন।
সাতক্ষীরা সদরের আসাদুজ্জামান, শ্যামনগরের এস এম আতাউল হক, মেহেরপুর সদরের ইয়ারুল ইসলাম, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির হোসাইন মো. আবু তৈয়ব, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর খন্দকার রুহুল আমিন, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার এম এ জাহের, চট্টগ্রামের চন্দনাইশের মোহাম্মদ আবদুল জব্বার চৌধুরী, কক্সবাজারের রামুর সোহেল সরওয়ার কাজল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ফিরোজুর রহমান, চট্টগ্রামের পটিয়ার মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও কক্সবাজারের মহেশখালীর মোহাম্মদ শরীফ বাদশাও পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগ করা উপজেলা চেয়ারম্যানদের তালিকায় আরও রয়েছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আবদুস ছোবহান ভূঁইয়া, দেবীদ্বারের আবুল কালাম আজাদ, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের গাজী মাঈনুদ্দিন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার আবদুল মোতালেব, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এস এম আল মামুন, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার এ কে এম সফি আহমদ ও সুনামগঞ্জের শাল্লার চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আবদুল মালেক সরকার, ঈশ্বরগঞ্জের মাহমুদ হাসান; শেরপুরের ঝিনাইগাতীর আবদুল্লাহেল ওয়ারেজ, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের মাহমুদুল হক, শেরপুরের শ্রীবরদীর এ ডি এম শহিদুল ইসলাম ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার আবদুল হাই আকন্দ পদত্যাগ করেছেন।
আরও পদত্যাগ করেছেন নেত্রকোনার দুর্গাপুরের জান্নাতুল ফেরদৌস, নাটোরের সিংড়ার শফিকুল ইসলাম, পাবনার চাটমোহরের আবদুল হামিদ, বগুড়ার আদমদীঘির সিরাজুল ইসলাম খান, শেরপুরের মজিবুর রহমান, সিরাজগঞ্জের বেলকুচির মো. নুরুল ইসলাম, উল্লাপাড়ার শফিকুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের কাবির মিয়া, নরসিংদীর মনোহরদীর সাইফুল ইসলাম খান, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের মহিউদ্দিন আহমেদ, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের মুশফিকুর রহমান খান, রাজবাড়ি সদরের ইমদাদুল হক বিশ্বাস, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মীর এনায়েত হোসেন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের শাহজাহান ভূঁইয়া, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের নাসিরুল ইসলাম খান, ঢাকার ধামরাইয়ের মোহাদ্দেছ হোসেন ও টাঙ্গাইলের গোপালপুরের ইউনুস ইসলাম তালুকদার।
পদত্যাগকারীদের বেশির ভাগ এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। তবে কয়েকজন চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রামের পটিয়া, সুনামগঞ্জের শাল্লা, সাতক্ষীরা সদর, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা ও কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান।
খুলনা গেজেট/কেডি