সিরাজগঞ্জের পর এবার লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হামছাদী কাজীরদীঘিরপাড় আলিম মাদরাসার এক শিক্ষক ছয় ছাত্রের মাথার চুল কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির মঞ্জু দশম শ্রেণির ছয় ছাত্রকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে কাঁচি দিয়ে চুল কেটে দেন।
এ ঘটনার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে বুধবার (৬ অক্টোবর) মাদরাসার বারান্দায় ঘটনাটি ঘটেছে ঘটেছে।
ভুক্তভোগী ছাত্ররা জানায়, তারা বুধবার ক্লাসে অংশ নেয়। একপর্যায়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ছয়জনকে দাঁড় করিয়ে শ্রেণি কক্ষের সামনের বারান্দায় আসতে বলেন। এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে একটি কাঁচি এনে একে একে সবার মাথার টুপি সরিয়ে সামনের অংশের এলোমেলো চুল কেটে দেন। পরে তারা লজ্জায় ক্লাস না করেই বেরিয়ে যায়।
মাদ্রাসার শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সব ছাত্রকে পরীক্ষার আগের দিন চুল কেটে মাদ্রাসায় আসতে বলেছি। দাখিলের কয়েকজন ছাত্র কমিটি ও শিক্ষকের কথার অবাধ্য হওয়ার কারণে কয়েকজনের চুল কেটে দিয়েছি। তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে থাকা ও নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই কমিটির সিদ্ধান্তে আমরা তিন শিক্ষকের উপস্থিতিতে চুল কেটে দিয়েছি। একটা পক্ষ মাদ্রাসার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা করছে।
বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সবসময় দলীয় প্রভাব বিস্তার করেন। তার ভয়ে অন্য শিক্ষকরাও নিরুপায়।
হামছাদী কাজীরদীঘিরপাড় আলিম মাদরাসার সুপার মাওলানা বালাকাত উল্যা বলেন, আমি অসুস্থ। চুল কাটার ঘটনাটি শুনেছি। কোনো ছাত্র লিখিত অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম সাইফুল হক বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনাটি জেনেছি। কেউ অভিযোগ করেনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ঘটনাটি আমি অবগত নয়। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হবে।
এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে অপমান সইতে না পেরে এক শিক্ষার্থী ছাত্রাবাসে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএম