খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪
প্লাটিনাম জুটমিলে উদ্বোধন ১৯ অক্টোবর

এবার দেয়া হবে খুলনা অঞ্চলের পাটকল শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ

মোহাম্মদ মিলন

এবার খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের প্রদান করা হবে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ। আগামী সোমবার (১৯ অক্টোবর) প্লাটিনাম জুট মিলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে খুলনা জোনের পাটকলগুলোর শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ প্রদান শুরু হবে। উদ্বোধন করবেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। এদিন কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকদেরও গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে সকল মিলের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। এমনটাই জানিয়েছেন বিজেএমসির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোঃ গোলাম রব্বানী।

তিনি জানান, আগামী সোমবার প্লাটিনাম ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের চেক প্রদানের মাধ্যমে খুলনা জোনের পাটকল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ শুরু হবে। এদিন প্লাটিনাম জুট মিলের ৩০ জন শ্রমিকের সঞ্চয়পত্রের কাগজপত্র, ব্যাংক একাউন্ট নগদ টাকা প্রদানের স্লিপসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করা হবে।



খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, খুলনা অঞ্চলের প্রথম পর্যায়ে প্লাটিনাম ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ প্রদান করা হবে। এদিন বেলা ১২ টায় প্লাটিনাম জুট মিলের ৩০ জন শ্রমিককে আনুষ্ঠানিকভাবে পাওনা পরিশোধ করা হবে। পর্যায়ক্রমে প্রতিদিনই শ্রমিকদের পাওনা অর্থ প্রদান করা হবে। ইতোমধ্যে প্লাটিনাম জুট মিলের অর্থ ছাড় দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা যাতে নির্বিঘ্নে এবং হয়রানীমুক্তভাবে অর্থ পায় সে বিষয়ে শ্রম অধিপ্তরের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি থাকবে। প্লাটিনাম এবং কার্পেটিং জুট মিলের পর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ৫টি মিলের শ্রমিকদেরও পাওনা পরিশোধ করা হবে।

জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলের অবসরপ্রাপ্ত ও অবসানকৃত মোট ৩ হাজার ৮৩৬ জন স্থায়ী শ্রমিকের পাওনা অর্থ প্রদান করা হবে। এছাড়া বদলী শ্রমিকদেরও মজুরি কমিশনের অর্থ প্রদান করা হবে। গত ৫ অক্টোবর বিকালে খুলনা বিভাগীয় শ্রম অফিসের সম্মেলনকক্ষে সরকারি সিদ্ধান্তে সময়িক বন্ধ থাকা খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলসমূহের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছিলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়নি। মূলত সাময়িক উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব মিলগুলোকে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনা হবে।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, জিটুজি, পিপিপি অথবা লিজিং ব্যবস্থাপনায় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করে পাটকলগুলোকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে। মিলসমূহ চালু হলে দক্ষ শ্রমিকরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেখানে চাকুরি পাবেন। করিম জুটমিলের শ্রমিকদের পাওনা অর্ধেক চেকের মাধ্যমে এবং অর্ধেক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই খুলনার প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হবে।



জানা গেছে, নোটিশ মেয়াদের, অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের ৬০ দিনের মজুরি এরই মধ্যে পেয়েছেন শ্রমিকরা। প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ), গ্র্যাচুইটি, গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ সমুদয় পাওনার ৫০ শতাংশ নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে এবং বাকি ৫০ শতাংশ সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধ করা হবে। এরই মধ্যে শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বিজেএমসির হাতে পৌঁছেছে। লোকসান থেকে বাঁচতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর ২৪ হাজার ৮৮৬ স্থায়ী শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের (স্বেচ্ছা অবসরে) মাধ্যমে অবসরে পাঠানো হচ্ছে বলে গত ২৮ জুন ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী। ১ জুলাই থেকে বিজেএমসির ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ এবং শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ নিয়ে সভার পর গত ২ জুলাই বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বন্ধ ঘোষণা করা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের প্রতি শ্রমিক গড়ে ১৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫৪ লাখ টাকা পর্যন্ত পাবেন। সরকার তাদের পাওনার অর্ধেক নগদে পরিশোধ ও বাকি অর্ধেক টাকার সঞ্চয়পত্র দেবে।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, পাটপণ্যের উৎপাদন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও পুনর্বিন্যাস করে বিজেএমসির বন্ধ মিলগুলো জরুরি ভিত্তিতে ফের চালু করা হবে। এজন্য মিলগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি), যৌথ উদ্যোগ জিটুজি বা লিজ মডেলে পরিচালনার মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব আবার উৎপাদনে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

 

খুলনা গেজেট / এমএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!