বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ছেড়ে পলায়ন, প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে আগুনের ঘটনায় অনেকটাই চাপা পড়ে ছিল লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার পরিস্থিতি। সেখানেও এখন চলছে বিক্ষোভ। আর, বিক্ষোভকারীদের চোখ সেই প্রেসিডেন্ট ভবনের দিকেই।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে—আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। দেশটির স্থানীয় সময় শনিবার বিক্ষোভকারীরা রাজধানী বুয়েন্স এইরেসে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে জড়ো হতে থাকে। মূল্যস্ফীতি ও গলার কাঁটা হয়ে থাকা জাতীয় ঋণের বিরুদ্ধে তারা স্লোগান দিতে থাকে। তাদের লক্ষ্য—সরকার ও প্রেসিডেন্টের অপসারণ।
এমনিতেই আর্জেন্টিনা সরকার নানা বিভাজনের কারণে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মধ্য-বামপন্থি প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দেজের ওপর রয়েছে বামপন্থি জোট শরিকদের চাপ। জোট শরিকেরা চায়—করোনা মোকাবিলায় সরকার আরও ব্যয় করুক। কিন্তু, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণে আকণ্ঠ ডুবে থেকে আলবার্তো ফার্নান্দেজ সে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ এসে করোনার ধকলের ওপর চেপে বসায় অন্য অনেক দেশের মতোই আর্জেন্টিনার অবস্থা নাজুক। আগে থেকেই ঋণে ডুবে থাকা এ দেশের জনজীবন এখন ৬০ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতির ধকলে পর্যুদস্ত। সংকটের মধ্যেই তাঁর তুলনামূলক নিকট দুই মিত্র জোট থেকে সরে গেছে।
গত মাসে তারা সরে যাওয়ার পরই আলবার্তো ফার্নান্দেজ আরও বিপদে পড়েন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ফুরিয়ে আসছে। দরকারি ওষুধপত্রসহ অতি প্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় করতেও এখন ভাবতে হচ্ছে ফার্নান্দেজকে।
এ অবস্থায় মানুষও অস্থির হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি এখনও শ্রীলঙ্কার মতো না হলেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
অনেকেই আর্জেন্টিনার এ সংকটের জন্য আইএমএফকে দায়ী করছেন। তাঁরা বলছেন, ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের যে ঋণচুক্তি তাদের সঙ্গে রয়েছে, তা আর্জেন্টিনাকে ভেতর থেকে খেয়ে ফেলেছে। কারণ হিসেবে অনেকে বলছে, আইএমএফের কঠোর নীতিই এ বিপাকের মূলে।
খুলনা গেজেট/ এস আই