হজ ফ্লাইট শুরু ১৯ দিন পর। হজযাত্রীদের ভিসা প্রদানের শেষ সময় ১৮ এপ্রিল। তবে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত অনেক হজযাত্রীর বাড়িভাড়া সম্পন্ন হয়নি। এ কারণে ভিসা নিয়ে জটিলতা হতে পারে। এদিকে মক্কা ও মদিনায় কতজন হজযাত্রীর বাড়িভাড়া হয়েছে– এ তথ্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে নেই।
হজ এজেন্সিগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কাজ করছে মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে বাড়িভাড়া নিয়ে জটিলতাসহ নানা কারণে ৯ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, হজযাত্রীদের বাড়িভাড়ার তথ্য প্রতিবছর অনলাইনে ধর্ম মন্ত্রণালয় দেখতে পেত। কিন্তু এ বছর এই ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি সরকার। সে দেশের কোম্পানির মাধ্যমে বাড়িভাড়ার নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। অন্যান্য বছরের মতো বাড়িভাড়ার অনলাইন ব্যবস্থা চালু করার জন্য সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ডিজিকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জেদ্দা হজ অফিসের কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম। গত মঙ্গলবার সৌদি সরকারের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাড়িভাড়ার অনলাইন পদ্ধতি চালুর বিষয়ে অনুরোধ জানান। তবে সেই পদ্ধতি চালু হয়নি। এদিকে অনেক হজ এজেন্সি কম দামে ভাড়ার জন্য বাড়ি খুঁজতে গিয়ে বিলম্ব করছে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক বলেন, আগে হজ এজেন্সিগুলো নিজেরা বাড়িভাড়া করতে পারত। এবার সৌদি সরকারের নিজস্ব কোম্পানির মাধ্যমে এজেন্সিগুলোকে বাড়িভাড়া করতে হচ্ছে। এ জন্য কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ তথ্য না পেলে কীভাবে ব্যবস্থা নেবেন– এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লিড ও সমন্বয়কারী এজেন্সিগুলোর কাছে তথ্য নেওয়া হয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ শাখার কর্মকর্তারা বলেন, সৌদি আরবের মক্কায় ৬ হাজার ৫৪৯ জন এবং মদিনায় ২ হাজার ২৬৭ জন হজযাত্রীর বাড়িভাড়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই ৮ হাজার ৮১৬ জন হজযাত্রীর মধ্যে প্রায় ২ হাজার জনের জন্য এ পর্যন্ত বাড়ি বা হোটেল ভাড়ার ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মে আবেদনই করেনি সংশ্লিষ্ট ৭টি এজেন্সি। বাড়িভাড়া চূড়ান্ত না হওয়ায় এই ব্যক্তিদের হজযাত্রা নিয়ে উদ্বিগ্ন ধর্ম মন্ত্রণালয়। তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ, ধর্ম মন্ত্রণালয় এজেন্সিগুলোর কাছে তথ্য নিয়েছে। এই সংখ্যা কম সঠিক নাও হতে পারে।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, কোনো এজেন্সির অবহেলা বা গাফিলতির কারণে একজন হজযাত্রীও যদি হজ করতে না পারেন, সেই দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে। এসব কারণে কোনো ব্যক্তি হজে যেতে না পারলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে।
বাড়িভাড়া সম্পন্ন না হওয়া হজযাত্রীদের ভিসা পাওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কারণ, বাড়িভাড়া ও বায়োমেট্রিক ছাড়া হজযাত্রীদের ভিসা হয় না। এখন পর্যন্ত বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৮১ হাজার ৯০০ হজযাত্রীর মধ্যে মাত্র এক হাজার ৫০০ জনের ভিসা হয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনার ৫ হাজার ২০০ হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। অথচ ভিসা প্রদানের সময় আছে মাত্র ১০ দিন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (হজ শাখা) মঞ্জুরুল হক বলেন, হজযাত্রীর বাড়িভাড়া ও বায়োমেট্রিক ছাড়া ভিসার আবেদন করা যায় না। এ জন্য এজেন্সিগুলোকে বাড়িভাড়ার সঙ্গে ভিসা কার্যক্রম শেষ করার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি হজযাত্রীদের বাড়িভাড়া আগামী ১৪ থেকে ১৫ এপ্রিল শেষ হতে পারে। এরপর তাদের ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
খুলনা গেজেট/এইচ