দেশে গত এপ্রিল মাসে ৭৮টি রাজনৈতিক সহিংসতায় ১১ জন নিহত ও ৭২৭ জন আহত হয়েছেন। আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক প্রতিশোধপরায়ণতা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন স্থাপনা দখলকেন্দ্রিক বেশির ভাগ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে গণপিটুনির ২২টি ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন।
মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) মাসিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার সংস্থাটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এক মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিল মাসেও মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রকৃত অবস্থা ছিল হতাশাজনক। পবিত্র রমজান মাসে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দ্রব্যমূল্য ও ঈদযাত্রা কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হয়নি।
এপ্রিল মাসে কমপক্ষে ১৯৬ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে জানিয়ে এইচআরএসএসের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে কমপক্ষে ৮৮ জন। যাদের মধ্যে বেশির ভাগ ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু। ১৯ জন নারী ও কন্যা শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ সময়ে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ছয়জন।
এ ছাড়া এ মাসে কমপক্ষে ১০৫ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়। যাদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছে। ৯০ জন শিশু শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
এইচআরএসএসের তথ্য অনুযায়ী, গেল মাসে অন্তত ২৯টি ঘটনায় কমপক্ষে ৩৮ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ১৫ জন সাংবাদিক।
এ ছাড়া লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ৭ জন। হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ৫ জন। গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনজন। এ ছাড়া দুটি মামলায় ৮ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
একই সময়ে ২৪টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় ৫ জন নিহত ও আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১৪ জন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও শ্রমিকদের সুরক্ষার অভাবে দুর্ঘটনায় ১১ জন শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে মারা গেছেন।
এ ছাড়া এ মাসে কারাগারে কমপক্ষে ৯ জন আসামি মারা গেছেন। যার মধ্যে ২ জন কয়েদি ও ৭ জন হাজতি রয়েছে। এদের মধ্যে দুজন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
সার্বিক বিষয়ে এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম বলেন, এপ্রিলে রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনক। নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতন, সাংবাদিক নিপীড়নও তুলনামূলক বেড়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ব্যত্যয় হলে দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাবে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস