প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের ঘোষণার পরপরই কিছুটা উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন। প্রধান দল বিএনপি ও তার কাছাকাছি থাকা দলগুলো এপ্রিলকে নির্বাচনের জন্য আদর্শ সময় মনে করছে না। এনিয়ে বক্তব্য বিবৃতি দিচ্ছেন তারা। চলছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত সময় নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
নির্বাচনের ৪৫ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করতে হয়। এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন ভোট গ্রহণ হবে ধরে নিলে নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হবে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে। ওই সময়ে রোজা চলমান থাকবে।
নির্বাচনের বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই ও প্রতীক বরাদ্দের কাজগুলো করতে হবে রমজান মাসজুড়ে। এমনকি, প্রচারও হতে পারে ঈদের পরপরই। তখন আবার কালবৈশাখীর মতো দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে।
এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নয়। আর রোজা এবং আবহাওয়ার মতো বিষয়গুলো মাথায় নিয়েই ভোট গ্রহণের জন্য সম্ভাব্য সময় বেছে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ধরে নিচ্ছি ঈদুল ফিতর হবে ১৯ থেকে ২০ মার্চ। এই সময়ে তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। রোজার সময় তাপমাত্রা কম থাকতেই দেখা গেছে। এসময় গরম বেশি না পড়ায় মানুষের পক্ষে নিয়মিত প্রচারে কোনো অসুবিধা হবে না।
প্রেস সচিব বলেন, এপ্রিলের ৯ দিন কালবৈশাখী হয়। আর এটা হয় এপ্রিলের ১০ তারিখের পর থেকে।
এদিকে নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে, অভ্যুত্থাণকারী তরুণরাসহ বিভিন্ন দলকে এক করে জুলাই সনদ কিংবা জুলাই ঘোষণার মতো বিষয়ের নিষ্পত্তি করা। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। তৈরি করতে হবে বিতর্কহীন ভোটার তালিকা। সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়েও আছে জটিলতা।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় মনে করে, এজন্যই এপ্রিল পর্যন্ত সময় নিয়েছেন তারা।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টই বলে দিয়েছেন এই সময় নির্বাচন কেন। তিনি বলেছেন, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। আমরা এই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের কাজগুলো গুছিয়ে আনবো।
তিনি বলেন, আমাদের ম্যান্ডেট এটাই ছিল। এটা তো আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নয়, যে আপনি এলেন, আর আপনার কাজই শুধু নির্বাচন। এখানে আমাদের কাজ শুধুই এটা নয়। সংস্কারের মতো বড় একটা কাজ আমাদের আছে।
রোডম্যাপ ঘোষণার আগেই, নির্বাচনের সময় নিয়ে কথা বলে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন অংশীজন। বিএনপি ও তার সাথে থাকা অন্তত ৫০টি দল ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলে। জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতের মতো দলগুলো এপ্রিলে নির্বাচন হতে পারে বলে মতামত দেয়া। শেষ পর্যন্ত ওই সময়েই নির্বাচনের ঘোষণা দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
খুলনা গেজেট/এমএম