টানা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’। রোববার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁয়ে বাংলাদেশ চেম্বার ইন্ড্রাস্ট্রিজের (বিসিআই) কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ঐক্য পরিষদের মহাসচিব ও আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা।
আন্দোলন প্রত্যাহার হওয়ায় এনবিআরের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ব স্ব কাজে যোগ দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিষয়ে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবং দেশের আমদানি-রপ্তানি ও সাপ্লাই চেইন সচল রাখা তথা অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ তাদের কমপ্লিট শাটডাউন এতদ্বারা প্রত্যাহার করছে। তবে, একটি পূর্ণাঙ্গ ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কারে আমাদের উদ্যোগ ও কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, অর্থ উপদেষ্টার সাথে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের আলোচনার প্রেক্ষিতে কিছু বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে সরকার রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কারে যে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছে তাকেও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ স্বাগত জানায়। এই কমিটির সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করে টেকসই রাজস্ব সংস্কারে অবদান রাখতে পারবো বলে আমরা মনে করি।
উল্লেখ্য, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে গত ২১ জুন থেকে টানা কর্মসূচি পালন করে আসছিল ঐক্য পরিষদ। এরমধ্যে গত ২৮ জুন শনিবার থেকে টানা ‘কমপ্লিট শাট ডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি’ পালন করে আসছেন পরিষদের নেতারা। কর্মসূচি পালনকালে আন্তর্জাতিক যাত্রী সেবা ব্যতীত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আন্দোলনের কারণে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় দেশের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
গতকাল শনিবার ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণে এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলনকে অযৌক্তিক বলে দাবি করেন। এরপর আজ দুপুরে অন্তবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এনবিআরের আন্দোলনকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে কর্মকর্তাদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় দেশের অর্থনীতি ও জনগণের স্বার্থে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
অপরদিকে দুদকের পক্ষ থেকে ঐক্য পরিষদের সভাপতিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে বিবৃতি দেওয়া হয়। এরপরই রাতে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা আসল।