খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

এখনো অন্ধকারে পল্লী বিদ্যুতের ১০ লাখ গ্রাহক

গেজেট ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের চারদিন পেরিয়ে গেলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়নি। এখনো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন ১০ লাখের বেশি গ্রাহক। এরমধ্যে বেশির ভাগ গ্রাহকই পল্লী বিদ্যুতের। ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ ভেঙে, তার ছিঁড়ে, খুঁটি উপড়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৯ লাখের বেশি গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। এ ছাড়া অন্য বিতরণ সংস্থারও কিছু গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এখনো ১০ লাখেরও বেশি গ্রাহক অন্ধকারে রয়েছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দক্ষিণাঞ্চলের ভুক্তভোগীরা বলছেন, অসহনীয় গরম। এমন অবস্থায় চারদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। রাতে ঘুমাতে পারি না। এত বড় ঝড় গেল, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করবো যে, মোবাইলেও কল যায় না।

ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুৎ সূত্র জানায়, রোববার রাতে রেমালের তাণ্ডব শুরুর পর বিভাগের সর্বত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গতকাল পর্যন্ত ওজোপাডিকো’র ৫০ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা যায়নি বলে সূত্র জানিয়েছে।

ওজোপাডিকো বরিশাল অঞ্চলের পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবদুল মজিদ গতকাল বিকাল ৬টার দিকে  বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে তার এলাকায় ২ লাখ ২১ হাজার গ্রাহকের প্রায় সবাই ১৮ থেকে ১৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন। তবে সেটা আস্তে আস্তে কমে এখন ১০ থেকে ১৫ হাজার বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। তিনি আশা করেন শনিবার অথবা রোববারের মধ্যে সবাই বিদ্যুৎ পেয়ে যাবেন।

ওজোপাডিকো বরিশাল অঞ্চলের ঝালকাঠি, নলছিটি ও কাঠালিয়া বেশি ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে অসংখ্য গাছ ভেঙে পড়ে আছে। খুঁটি ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব মেরামত ও গাছ অপসারণে সময় লাগছে। তবে ওজোপাডিকো’র প্রধান প্রকৌশলী (ওএন্ডএম) মো. রোকনউজ্জামান সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দাবি করে মানবজমিনকে বলেন, ১০০ ভাগ গ্রাহককে বিদ্যুৎ দিতে তারা সক্ষম হয়েছেন। তাদের সাড়ে ১৫ লাখ গ্রাহক রয়েছে।

অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ লাইন ছিঁড়ে ও খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে মোবাইল টাওয়ার বা বেজ ট্রান্সমিটার স্টেশন (বিটিএস) সেবা দিতে পারছে না। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে দক্ষিণের জেলাগুলোর লাখ লাখ মানুষের মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর।

রেমালে যেসব জেলায় তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি এমন জেলায়ও এখন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অর্থাৎ ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ থাকে না। বুধন্তী ইউনিয়নের গ্রাহকরা অভিযোগ করেন এখানে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছে। প্রচণ্ড লোডশেডিংয়ের কারণে অসহনীয় গরমে কষ্টে আছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। একই অবস্থায় হবিগঞ্জ জেলাও।

রোববার ঘূর্ণিঝড় রেমাল শুরুর সময় আরইবি’র বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৩ লাখ ৯ হাজার ৭০২ ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)’র বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৮১। আরইবি’র শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা দাবি করেন তাদের এখন ৯ লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন। যা আরইবি’র গ্রাহকের ৩ শতাংশ মাত্র। পাওয়ার সেলের তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের মোট গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ৭০ লাখ। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)’র ঝড়ের কারণে বর্তমান বিদ্যুৎবিহীন গ্রাহকের সংখ্যা ৫০ হাজার। ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক লাইনের অবশিষ্টাংশের মেরামত কাজ চলমান আছে বলে সূত্র বলছে। বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক করার কাজ চলমান রয়েছে। অতিসত্বর সম্পূর্ণ লাইন চালু হবে বলে আশা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

সারা দেশে বিদ্যুতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইনের সঙ্গে। তিনি  বিকাল সোয়া ৫টার দিকে বলেন, দেশে ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুৎ বিভাগের অনেক ক্ষতি হয়েছে। গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা পড়ে আছে। তার ছিঁড়ে গেছে। এখন আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে আসছে। এখন মাত্র এক শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। যেসব জেলায় ঘূর্ণিঝড়ে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি এমন জেলাও এখন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে-এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই জেলায় আগে কি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেয়েছিল। প্রশ্ন রাখেন তিনি।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!