দুপুর সাড়ে ১২ টা। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে কক্ষের সামনে ঘুরাঘুরি করছে ইখড়ি গ্রামের দিনমজুর কবির শেখ। আঘাত পাওয়া পায়ের এক্স-রে করাতে এসেছেন তিনি। কিন্তু এক্স-রে কক্ষের দরজায় ঝুলছে তালা। পরে তিনি জানতে পারেন এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘ ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অনেক্ষণ অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। পরে যখন জানতে পারলেন তখন মুখ মলিন করে বেরিয়ে গেলেন।
শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেল এই চিত্র। এক্স-রে করাতে আসা কাটেংগা এলাকার রাকিবুল ইসলাম বলেন, ভাই এটাকি সারা বছরই নষ্ট থাকে? আমরা এলাকার লোক তো এটার সুবিধা পাই না। খুলনা শহরে একটা এক্স-রে করাতে ১ হাজার টাকা নেয়। এটা ঠিক থাকলে অল্প টাকায় এক্স-রে করা যেত। কষ্টও কম হত। জানা গেছে, এখানে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ শত রুগি চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। এর মধ্যে শতাধিক রুগি এক্স-রের প্রয়োজন হয়। হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় এক্স-রে রুম ও অত্যাধুনিক অস্ত্র পাচার কক্ষ সহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ তালাবদ্ধ থাকতে দেখা যায়। এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘদিন অকেজো থাকার পর মেরামত করা হয় ২০০৯ সালে। তবে প্রায় ১৪ বছর মেশিনটি আর চালু করা হয়নি। এক্স-রে টেকনিশিয়ান সহ বিভিন্ন পদে জনবল সংকট রয়েছে ফলে তেরখাদা উপজেলার ২ লাখধিক মানুষের সেবার আশ্রয়স্থল এই হাসপাতালটিতে এক্স-রে ও অস্ত্রপাচার কক্ষ সহ গুরুত্বপূর্ণ কক্ষ সব সময় তালা ঝুলতে দেখা যায়।
এছাড়াও অবহেলা অযতেœ পড়ে রয়েছে এক্স-রে মেশিন সহ অস্ত্রপাচার কক্ষের বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্রপাতি। বর্তমানে কর্মরত চিকিৎসকদের আমলে কেউ কোনদিন এক্স-রে মেশিনটির চেহারাও দেখেননি। শুধু শুনেছে রুমের মধ্যে একটি এক্স-রে মেশিন আছে, যা তালা দেওয়া। এতে করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রুগিরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অনিক কুন্ডু বলেন, এক্স-রে টেকনিশিয়ান না থাকায় মেশিনটি কাজে আসছে না। এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষর সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য হাসপাতালটিতে ১৭৪ টি পদের মধ্যে প্রথম শ্রেণির ১৯ টি পদ ও দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের ৮১ টি পদই খালি রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএম