স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘ইদানীং আমাদের করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যদি মাস্ক না পরি, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখি, সংক্রমণ তো বাড়বেই। তারপর আবার মানুষ যেভাবে কক্সবাজার যাচ্ছে, সিলেটে যাচ্ছে, যেভাবে সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে, মাস্ক পরার বালাই নেই, সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই, সংক্রমণ তো বাড়বেই।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের আবারও সজাগ হতে হবে। করোনা চলে যায়নি। করোনা যখন যাবে তখন আমরা সবাই জানব। শুধু বাংলাদেশ না, গোটা পৃথিবী থেকে দূর হলে বাংলাদেশ নিরাপদ হবে।’
‘কাজেই এক ডোজ টিকা নিয়েই ভাবা উচিত না যে করোনামুক্ত। টিকা নিলেই করোনামুক্ত হবে না। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর সময় লাগবে সুরক্ষা তৈরি হতে। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আগে করোনা থেকে সুরক্ষা তৈরি হবে না,’ বলেন জাহিদ মালেক।
সারা দেশে করোনা মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি আছে, অনুষ্ঠানসহ সামাজিক কার্যক্রম সীমিত পরিসরে করার আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে টিকার আওতায় আনতে কাজ করছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। সিরাম থেকে কেনা টিকার তৃতীয় চালান আসবে চলতি মাসেই। এ ছাড়াও জুনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে কোভ্যাক্সের এক কোটি নয় লাখ ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, টিকার জন্য ৫৩ লাখেরও বেশি নিবন্ধন হয়েছে। ৪১ লাখেরও বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। টিকার দুটি ডোজ দেওয়া হয় একজনকে। সে হিসেবে দুই কোটি ডোজ দিয়ে ১ কোটি মানুষকে টিকা দেয়া সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যত মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে, প্রত্যেকে সুস্থ আছেন। কোনো জায়গায় কোনো অঘটন ঘটেনি। সরকার এখন যে টিকা দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে যা দেবে, তা পুরোটাই বিনামূল্যে থাকবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি রয়েছে। এর আগেই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের টিকা দেওয়া হবে।
বয়সসীমা ৪০ নির্ধারণ করার কারণে দেশের চার কোটি লোককে টিকা দিতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যেভাবে ভ্যাক্সিনেশন হচ্ছে, এ পর্যন্ত ভালোই আছে। এই ভালোটা বজায় রাখতে চাই। টিকা যদি আমাদের হাতে বেশি আসে, সব শিডিউল ঠিক থাকে, তাহলে হয়তো বয়সের বিষয়ে চিন্তা করতে পারব।’
এ দিকে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে আট হাজার ৫০২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া দেশে নতুন করে আরও এক হাজার ৫১ জন আক্রান্ত হয়েছে। দেশে মোট পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার ১৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে এক হাজার ৩০৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট পাঁচ লাখ ৭৯ হাজার ২০ জন করোনা থেকে সুস্থ হলো। আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৫.৮২ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ৫.৯৮ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
খুলনা গেজেট/ টি আই