খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  চার উপদেষ্টার আশ্বাসে ভোর ৪টায় হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা
জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার

একে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়েছেন আরিফ ও সাবরিনা

গেজেট ডেস্ক

কোভিড-১৯ টেস্ট নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার দম্পতি আরিফুল হক চৌধুরী ও ডা. সাবরিনা এ চৌধুরীকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পৃথক জিজ্ঞাসাবাদে একজন অন্যের ওপর দোষ চাপানোয় তাদের সামনাসামনি করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আরিফের ওপর ক্ষেপে যান সাবরিনা। স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠেন, তোমার জন্যই আজকে আমার এই অবস্থা। একজন ডাক্তার হয়েও জেলে, রিমান্ডে। জেকেজির করোনা রিপোর্ট জালিয়াতির ঘটনা তদন্ত সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

করোনা টেস্ট জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার করা হয় জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী আরিফ চৌধুরী ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনাকে। তারা দু’জনই এখন রিমান্ডে। ডিবির রিমান্ডে বুধবার সন্ধ্যায় একদফা মুখোমুখি করা হয়েছিল তাদেরকে। এ সময় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক (বরখাস্ত) ডা. সাবরিনা চৌধুরী বলেন, আরিফের জন্যই আজ তার এই অবস্থা।

সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সাবরিনা দাবি করেন, জেকেজি ও ওভাল গ্রুপের অনেকেই এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। আরিফ চৌধুরীর এই কর্মকাণ্ড এবং ব্যক্তিগত হয়রানির কারণে তিনি তাকে ডিভোর্সও দিয়েছেন। সাবরিনার দাবি তিনি জেকেজির চেয়ারম্যানশিপ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তবে আরিফ বলেছেন, সাবরিনার কারণে এই অপকর্মে জড়িয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার আবার তাদেরকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এদিকে বুধবার ডিবি জানায়, উভয়েই জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে এজন্য তারা একে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়েছেন। এদিন দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, আরিফ ও সাবরিনা করোনাকে কেন্দ্র করে তাদের জেকেজি হেলথ কেয়ারের ভুয়া রিপোর্টের কথা স্বীকার করলেও কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সেটা বলেননি।

আব্দুল বাতেন বলেন, কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে সেটি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সাবরিনার তিন দিনের রিমান্ড শেষ হচ্ছে। প্রয়োজনে তাকে আবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

গত ২৩ জুন সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ৬ জনকে গ্রেফতারের পর ৪টি মামলা করা হয় তেজগাঁও থানায়। আর গত রোববার সাবরিনাকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও কার্যালয়ে অফিসে আনা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে জালিয়াতিতে সাবরিনার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে।

সাবরিনার দাবি তিনি আরিফকে ডিভোর্স দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে সত্যাসত্য এখনও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। সাবরিনা আরিফের চতুর্থ স্ত্রী। বুধবার মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ জানিয়েছেন, জালিয়াতির বিষয়ে তার স্ত্রী সাবরিনাও সবকিছু জানতেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দুজনকেই পৃথক ও মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জালিয়াতির বিষয়ে তাদের কার কী ভূমিকা ছিল তা জানার চেষ্টা চলছে।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা গোয়েন্দা (তেজগাঁও) বিভাগের উপ-কমিশনার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, জেকেজি যে করোনাভাইরাস পরীক্ষার নামে জালিয়াতি করত তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন আমরা আরিফ বা সাবরিনা কার কতটুকু ভূমিকা ছিল তা নিরূপণ করার চেষ্টা করছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া যাবে।

তিনি বলেন, তারা প্রথমে পরস্পর পরস্পরকে দোষারোপ করেছে। তবে আরিফ অনেক কিছু স্বীকার করেছেন। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। খুব দ্রুত এই তদন্ত সম্পন্ন করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!