খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে। আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মরণ করি একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের, যাঁদের তাজা রক্তের শপথ বীর বাঙালির অস্ত্র ধারণ করে স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
বৃহস্পতিবার ( ২৫ মার্চ ) বাদ মাগরিব দলীয় কার্যালয়ে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ২৫ মার্চ ছিল অসহযোগ আন্দোলনের ২৪তম দিন। সেদিন সন্ধ্যায় ইয়াহিয়া খান গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন। রাত সাড়ে ১২টায় পাকিস্তানি সৈন্যরা সাঁজোয়া ট্যাংক নিয়ে “অপারেশন সার্চলাইট” এর নামে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যার আনন্দে মেতে ওঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা ও রাজারবাগে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, বাঙালি পুলিশ ও সামরিক সদস্যদের হত্যা করতে থাকে। পাকিস্তানি বাহিনী রাত ১টা ১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। এর অব্যবহিত আগেই জাতির পিতা স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা লিখে যান, “ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও”, যা প্রথমে ইপিআরের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। পরের দিন চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে সে বার্তা প্রচার করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙ্গালি জাতি মুুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনে। তিনি আরো বলেন, ‘গণহত্যা দিবসের ৫০ বছর পূর্তিতে আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, প্রয়োজনে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে হলেও ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখব।
তিনি বলেন, একাত্তরের বীভৎস গণহত্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও একটি কালো অধ্যায়। এমন গণহত্যা আর কোথাও যাতে না ঘটে, গণহত্যা দিবস পালনের মাধ্যমে সে দাবিই বিশ্বব্যাপী প্রতিফলিত হবে।’
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগের পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাড. সোহরাব আলী সানা, মুক্তিযোদ্ধা শ্যামল সিংহ রায়, মুুক্তিযোদ্ধা নুর ইসলাম বন্দ, অধ্যক্ষ শহিদুল হক মিন্টু, জামাল উদ্দিন বাচ্চু, আবুল কালাম আজাদ কামাল, শেখ মো. আনোয়ার হোসেন, মো. শাহজাদা, জোবায়ের আহমেদ খান জবা, কাউন্সিলর শামুসুজ্জামান মিয়া স্বপন, এ্যাড. অলোকা নন্দা দাস, মুক্তিযোদ্ধা মাকসুদ আলম খাজা, শেখ ফারুক হাসান হিটলু, শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম, কামরুল ইসলাম বাবলু, হাফেজ মো. শামীম, মো. মফিদুল ইসলাম টুটুল, শেখ নুর মোহাম্মদ, অধ্যা. রুনু ইকবাল, কাউন্সিলর ফকির মো. সাইফুল ইসলাম, কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান, এস এম আকিল উদ্দিন, এ্যাড. আব্দুল লতিফ, মো. মোতালেব মিয়া, সফিকুর রহমান পলাশ, রনজিত কুমার ঘোষ, এস এম আসাদুজ্জামান রাসেল, আব্দুল হাই পলাশ, বাবুল সরদার বাদল, মঈনুল ইসলাম নাসির, শেখ আবিদ উল্লাহ, মো. আজম খান, এমরানুল হক বাবু, এ্যাড. শামীম মোশারফ, আতাউর রহমান খান রাজু, মো. শিহাব উদ্দিন, ওহিদুল ইসলাম পলাশ, কাউন্সিলর কনিকা সাহা, আব্দুল কাদের শেখ, মো. শহিদুল হাসান শহিদ, পারভীন ইলিয়াছ, সাবিহা ইসলাম আঙ্গুরী, নুরানী রহমান বিউটি, নুর জাহান রুমী, রেজওয়ানা প্রধান, রেখা খানম, আইরিন চৌধুরী, নাছরিন সুলতানা, ইয়াছিন আরাফাত, মাহমুদুল ইসলাম সুজন, মাহমুদুর রহমান রাজেস, সংকর কুন্ডু, এম এ হাসান সবুজ, নিশাত ফেরদৌস অনি, ওমর কামাল সহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মহানগর শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক হাফেজ মো. আব্দুর রহিম।