জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১০ হাজার ৭০২ কোটি ২৩ লাখ টাকা খরচে সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে সরকার দেবে ছয় হাজার ৪৫৯ কোটি ২৭ লাখ এবং বিদেশি ঋণ চার হাজার ২৪২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী/সচিবরা একনেক সভায় অংশ নেন।
একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনা কমিশন বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এবং পরিকল্পনা কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা।
তাদের তথ্যমতে, আজ অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘প্রাণিপুষ্টির উন্নয়নে উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ ও লাগসই প্রযুক্তি হস্তান্তর’ প্রকল্প রয়েছে। এতে খরচ হবে ১১৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ’ প্রকল্পে খরচ হবে এক হাজার ৩৩৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘Western Economic Corridor & Regional Enhancement Program (WeCARE) Phase-I: Rural Connectivity, Market and Logistic Infrastructure Improvement Project (RCMLIIP)’ প্রকল্পে খরচ হবে দুই হাজার ১৮০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। তার মধ্যে ৬৪৩ কোটি ৬৮ লাখ দেবে সরকার এবং বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে এক হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘উইকেয়ার ফেজ-১: ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক (এন-৭) উন্নয়ন’ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে চার হাজার ১৮৭ কোটি টাকা। তার মধ্যে সরকার দেবে এক হাজার ৪৮২ কোটি পাঁচ লাখ এবং বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে দুই হাজার ৭০৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘পায়রা বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো/সুবিধাদির উন্নয়ন (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন আনা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল এক হাজার ১২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনে তা বাড়িয়ে করা হয় তিন হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ এবং আজ দ্বিতীয় সংশোধনীতে তা আরও বাড়িয়ে করা হলো চার হাজার ৩৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হলো।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী স্থাপন-১ম পর্যায় (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। এতে খরচ বেড়েছে ৫৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ২৫৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনে তা বাড়িয়ে করা হলো ৩০৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়িয়ে করা হলো ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।
সর্বশেষ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ৮০৫ কোটি ৯ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
একনেক সভায় অংশ নেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক; বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী।
খুলনা গেজেট/কেএম