চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। তবে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩১ লাখ ৫৩ হাজার।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও ভিয়েতনাম। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩২ কোটি ৬ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ লাখ ৩৮ হাজার।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ২১০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে পাঁচ শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৫ লাখ ৩৮ হাজার ৪১৩ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ লাখ ৫৩ হাজার ২০৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে অর্ধ লক্ষাধিক। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৬৮ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৫ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৮৮০ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ৫২ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৬৯ হাজার ১২৩ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৪০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২১ হাজার ১৫৫ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৭ লাখ ২৩ হাজার ৩০৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ১৭২ জনের।
এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ১৩৩ জন এবং মারা গেছেন ৩৩৫ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪৯ লাখ ৬৭ হাজার ৮১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫১ হাজার ৩৪২ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৫ জন এবং মারা গেছেন ৩১৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৫ হাজার ৩২২ জন এবং মারা গেছেন ২২৫ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩২ লাখ ৪০ হাজার ৩০৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৬ হাজার ৫৩০ জন মারা গেছেন। একই সময়ে স্পেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ১৬১ জন এবং মারা গেছেন ১১২ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ১৫৪ জন এবং মারা গেছেন ২৬১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭৮ লাখ ৫ হাজার ১৪৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৬৬ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৪৬ জন এবং মারা গেছেন ১৯১ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৯৭ হাজার ২২১ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২৮ লাখ ১৫ হাজার ৮২৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৬০৯ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৭১ হাজার ৪২৩ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪৩ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে ১৫৩ জন, পোল্যান্ডে ৪৮১ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫৯ জন, ফিলিপাইনে ৮২ জন, কানাডায় ১০৮ জন এবং ভিয়েতনামে ২০৬ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ১৯০ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৬৪ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।