মোংলা উত্তর কানমারী এলাকার বাসিন্দা ফরিদ মোল্লা। একটি গরু থেকে বর্তমানে পঁয়ত্রিশটি গরুর মালিক তিনি। এখন তার খামারে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন সবুর, জেসমিন ও জাহাঙ্গির। শখের বশে নিজের সন্তানের দুধের চাহিদা মেটাবার জন্য একটি গরু কেনেন। নিজেদের দুধের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি দুধ বিক্রিকরে তিনি কিছু টাকা জমান। সেই টাকার সাথে আরো কিছু টাকা মিলিয়ে কেনেন আরো একটি গাভী। এভাবেই আস্তে আস্তে তিনি ৩/৪ বছরের মধ্যে একটি গরুর খামারের মালিক হয়ে যান।
বর্তমানে তার খামারে গরুর সংখ্যা ৩৫ টি, দৈনিক তিনি ৮০ লিঃ দুধ সংগ্রহ করেন। খামার থেকে তার দৈনিক আয় ৪৮০০টাকা। এখন প্রতি মাসে দুধ বিক্রি করেন এক লক্ষ ৪৪ হাজার টাকার। খামারে রয়েছে নেপোলিয়ান, অস্টেলিয়ান, রানি সংঙ্কর সহ বিভিন্ন জাতের গরু।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসে এখানে দুধ কিনতে। দুধ নিতে আসা মনির বলেন, ‘আমি অনেক দিন ধরেই এই খামার থেকে দুধ নেই। এই খামারের দুধটা অনেক ভালো তাই আমার আব্বার জন্য নিতে আসি’
আরেকজন মহিলা ক্রেতা জনান, খামারের গরুর দুধের মান ভালো। তাই বাচ্চার জন্য পাশের গ্রাম থেকে এসেছেন দুধ কিনতে।
খামারি ফরিদ মোল্লা জানান, বর্তমানে গরুর খাবারের দাম অনেক বেশি। তাছাড়া স্থানীয় পশু হাসপাতাল থেকে কৃমির ঔষুধ ছাড়া তেমন কোন সহায়তা পাননা । এমনকি হাসপাতালে গেলে সময় মত গরুর বীজ পাওয়া যায়না। যে কারণে অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। তাছাড়া করোনাকালীন দুধ বিক্রি করতে সমস্যা হচ্ছে তার। করোনার কারণে বাইরের ক্রেতা আসছেনা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী খামারিদের জন্য কাজ করছি, তবে লোকবল সংকটের কারণে গরুর বীজ দিতে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে । শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে।’
খামারি ফরিদ মোল্লা বলেন, ‘জীবনে অনেক চড়াই উৎড়াই পার করে আজ আমি নিজের পায়ে দাড়িয়েছি। একটা সময় অনেক কস্ট করেছি এখন আল্লাহর রহমতে আমি খুব ভালো আছি। আমি মনে করি সরকার যদি বিনাসুদে ঋণ দেয় তাহলে যে সব যুবকেরা বেকার, চাকরির পিছনে ঘুরাঘুরি করছে। তারা গরু পালন করে নিজেরাই এমন উদ্যাক্তা হতে পারবে।’ গরুর খামারের ঠিক মতো পরিচর্যা করতে পারলে প্রতি মাসে দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ এস আই