জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে দেশব্যাপী এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের মেয়াদ আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসময় পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী অথবা ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) এর টিকা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) এলাকায় টিকাদান ক্যাম্পেইনের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে এক সমন্বয় সভা বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের নগর স্বাস্থ্য ভবন সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রায় পিছিয়ে থাকা এলাকা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের অধিকতর মোটিভেশন প্রয়োজন। এইচপিভি টিকার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই এবং এটি কিশোরীদের জন্য নিরাপদ। বিশ্বের অনেক উন্নতদেশে এই টিকা অনেক আগে থেকেই প্রচলিত। টিকাটির বিষয়ে ভুলধারণা, অপপ্রচার ও গুজব দূর করতে চিকিৎসক, টিকাদানকারী ও ইতোমধ্যে টিকা নিয়েছে এমন শিক্ষার্থীদের নিয়ে টিকাগ্রহণে ভীতি বা অনীহা প্রকাশকারীদের সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে। সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করা যায়।
সভাপতির বক্তৃতায় সিটি কর্পোরেশনের সচিব শরীফ আসিফ রহমান বলেন, নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। তাই এই ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এক ডোজ এইচপিভি টিকা গ্রহণ অত্যাবশ্যক। সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে সকল সীমাবদ্ধতা চিহিৃত করে তার সামাধান করতে হবে।
সভায় কেসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ স্বপন কুমার হালদার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেনসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্ভিল্যান্স অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন মেডিকেল অফিসার ডাঃ নাজমুর রহমান সজিব।
উল্লেখ্য, বিশ্বে প্রতি দেড় মিনিটে একজন নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে মারা যান। যাদের ৯০ শতাংশ বাংলাদেশের মতো নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের অধিবাসী। নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর প্রধান কারণ জরায়ুমুখ ক্যান্সার। বাংলাদেশে প্রতি লাখ নারীর মধ্যে ১১জন এরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং দেশে প্রতিবছর প্রায় ৬ হাজার ৫৮২জন নারী এরোগে মৃত্যুবরণ করেন। এইচপিভি টিকা গ্রহণের মাধ্যমে রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। গত ২৪ অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী বিনামূল্যে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হয়। নির্দিষ্ট বয়সী ও নির্ধারিত শ্রেণিতে অধ্যয়নরত কিশোরীরা www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে টিকাকার্ড সংগ্রহ করতে পারবে। ঐ কার্ড দেখিয়ে টিকার ডোজ গ্রহণ করা যাবে।
খুলনা গেজেট/এএজে