চরমোনাইর তিনদিন ব্যাপী অগ্রহায়ণ মাহফিল আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে আজ। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বাদ জোহর চরমোনাই মাদরাসার মূল মাঠ ও ৩নম্বর মাঠ নিয়ে ২টি মাঠে চরমোনাই পীর মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম এর উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে এই মাহফিল শুরু হয়।
উদ্বোধনী বয়ানে চরমোনাই পীর বলেন, চরমোনাই মাহফিল দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে নয় বরং পথভোলা মানুষকে আল্লাহর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই এই মাহফিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুতরাং এখানে দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আসার প্রয়োজন নেই। যদি এমন কেউ এসে থাকেন তবে নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে চরমোনাই পীর আরও বলেন, যারা চরমোনাইতে নতুন এসেছেন, তারা দুনিয়ার ধ্যান-খেয়াল বিদায় করে দিয়ে আখেরাতের খেয়াল-ধ্যান অন্তরে যায়গা দেন। দিল থেকে বড়ত্ব এবং আমিত্ব ভাব বের করে দিয়ে আল্লাহর কুদরতি পায়ে নিজেকে বিলীন করে দিতে হবে। সদা-সর্বদা আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে দিলকে তরতাজা রেখে আল্লাহর ওলী হয়ে চরমোনাই থেকে বিদায় নেয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।
চরমোনাই পীর তাঁর উদ্বোধনী বয়ান শেষে মাহফিলের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা করেন।
আজ সকাল ৮টা থেকে মাহফিলে আগত মুসল্লীদের সহস্রাধিক হালকায় বিভক্ত করে হাতে-কলমে সালাত ও ইসলামের বুনিয়াদি বিষয়ে বাস্তব প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
মাহফিলে আগত মুসল্লীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যা বিশিষ্ট অস্থায়ী মাহফিল হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এতে ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে আরো ৪০ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে চিকিৎসা সেবা পরিচালিত হচ্ছে। ৬ টি এ্যাম্বুল্যান্স ও ১ টি নৌ এ্যাম্বুলেন্স মাহফিল হাসপাতালে কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীকে তাৎক্ষণিক মাহফিল হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য নিযুক্ত রয়েছে বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী।
দুটি মাঠে মাহফিলের শৃঙ্খলা রক্ষায় নিযুক্ত করা হয়েছে বিশাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর স্পেশাল টীম।
সারাদেশ থেকে আগত মুসল্লীদের খাবারের জন্য উভয় মাঠের চারিদিকে সুপেয় নিরাপদ পানির ব্যবস্থাসহ রয়েছে সহস্রাধিক মানসম্মত টয়লেট, ওজু এবং গোসলের ব্যবস্থাপনা।
তিন দিনব্যাপী বিশাল এ মাহফিলের প্রথমদিন তথা আজ বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দিন সারাদেশ থেকে আগত ওলামায়ে কিরামদের নিয়ে ওলামা সম্মেলন ও শেষদিন সকালে সারাদেশ থেকে আগত ছাত্র-জনতাকে নিয়ে ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও মাহফিলে আগত যুবক, শ্রমিকদের নিয়ে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ এবং ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজন করে বিশেষ মতবিনিময় সভা।
আগামী শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮ টায় হযরত চরমোনাই পীর আখেরি বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী বিশাল এ মাহফিলের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
খুলনা গেজেট/এমএম