যশোরে উদীচী হত্যাকান্ড দিবস পালিত হয়েছে। বিচারহীনতার ২৬ বছরে বৃহস্পতিবার উদীচী পালন করলোা প্রততিবাদী এ হত্যাকান্ড দিবস। নারকীয় এ হত্যাযজ্ঞের বিচারহীনতা ও দীর্ঘসূত্রিতা জাতির জন্য লজ্জাজনক বলে এদিন নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেছেন।
‘এসো প্রতিবাদী, এসো সংগ্রামী, বলো হত্যাকারীর ফাঁসি চাই’ এ স্লোগান নিয়ে এ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে ও এ ঘটনার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করেছে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী যশোর জেলা সংসদ। পবিত্র রমজান মাসের কারণে এবার সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি নেয় যশোর উদীচী।
এদিন সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানস্থলে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন, বেলা ১১টায় নিজস্ব মিলনায়তনে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা এবং সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে আলোক প্রজ্জ্বালনের মধ্য দিয়ে যশোর হত্যাকান্ড দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে প্রথমে অনুষ্ঠানস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উদীচীর নেতৃবৃন্দ, অক্ষর শিশু শিক্ষালয়, কিংশুক সঙ্গীত শিক্ষা কেন্দ্র, সুরধুনী, বিবর্তন, সুরবিতান, তির্যক, চাঁদের হাট, রাজনৈতিক সংগঠন জাসদসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীবৃন্দ। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সংগঠনের নিজস্ব মিলনায়তনে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন উদীচী সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু। ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন, উদীচী উপদেষ্টা অশোক রায়, খন্দকার আজিজুল হক মনি, সহ-সভাপতি খন্দকার রাজিবুল ইসলাম টিলন, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক সুকান্ত দাস, সাবেক সভাপতি সোমেষ মুখার্জী, অক্ষর স্কুলের অধ্যক্ষ শৈলেশ কুমার রায়, বিবর্তণ সভাপতি নওরোজ আলম খান চপল, তির্যক সভাপতি দীপংকর দাস রতন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, কোনো দেশকে ধ্বংস করতে হলে প্রথমে সে দেশের সংস্কৃতিতে আঘাত হানতে হয়। তাই পরিকল্পিতভাবেই ভয়ভীতি তৈরির লক্ষ্যে ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে উদীচী হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছিল। দীর্ঘ ২৬ বছরে একের পর এক সরকার পরিবর্তন হয়েছে, তবু উদীচী হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত হয়নি। এমন নারকীয় হত্যাযজ্ঞের বিচারহীনতা ও দীর্ঘসূত্রিতা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জাজনক। নৃশংস এ হত্যাকান্ডের বিচার না হলে এ ধরনের ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। অপরাধ ও জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। সংস্কৃতি ধ্বংস হবে।
তারা আরও বলেন, ওই সময়ে যে চার্জশিট দেয়া হয় তাতে প্রকৃত দোষীরা আড়ালে চলে যায়। দুই যুগ পেরিয়ে গেছে এখনো আইনের বেড়াজালে আটকে রয়েছে উদীচী হত্যাকান্ড। বক্তারা নতুন করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে উদীচী হত্যাকান্ডে দোষীদের বিচারের দাবি জানান। এছাড়া বক্তারা উদীচী হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে রোজার মাস শেষে অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে যাবার বিষয়েও প্রস্তাব করেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, উদীচীর অনুষ্ঠান সম্পাদক কাজী শাহেদ নওয়াজ ও সহ-সাধারণ সম্পাদক আসিফ আকবর নিপ্পন।
খুলনা গেজেট/এএজে