মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত আলোচিত সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’। অনেক আগে সিনেমাটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কারও লাভ করেছে এটি। কিন্তু এখনো বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র মেলেনি। এ নিয়ে আপিল করেছেন ফারুকী; তবু উত্তর মেলেনি।
দীর্ঘ দিন পর বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন ফারুকী। কয়েক দিন আগে এ নিয়ে আক্ষেপ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দেন তিনি। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ‘ব্যাচেলর’খ্যাত এই পরিচালক। লেখার শুরুতে ফারুকী বলেন—‘আমার কত রাত গেছে অনিদ্রায়। কত দিন গেছে ক্ষমতাবানদের দুয়ারে হাত মুছতে মুছতে। কত দুপুর গেছে রাগে অন্ধ হয়ে। কত বছর গেছে নিজের চিৎকার নিজেই গিলে ফেলে। ধন্যবাদ, হে রাষ্ট্র! ফিল্ম মেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ তো আর নাই। সুতরাং, ঠিকই আছে। তোমাকে ধন্যবাদ, আমাকে ঠিকঠাক সাইজ করার জন্য।’
ফারুকী তার নির্মিত কয়েকটি সিনেমার নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘ব্যাচেলরের সময় তুমি ভাবছো আমার সিনেমা সমাজ নষ্ট করে ফেলবে! মেড ইন বাংলাদেশে ভাবছো এই সিনেমা দেশ ধ্বংস করবে! সুতরাং দেড় বছর সেন্সর জেলে রাখছো! ঠিকই আছে। থার্ড পারসন সিঙ্গুলারের জন্য সেন্সরের জেলটা একটু বোধহয় কম হয়ে গেছিলো। অপরাধ বিবেচনায় ওই সিনেমা আটকে রাখা উচিত ছিল তিন বছর। যাই হোক, শনিবার বিকেলে সেটা পুষিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। উঠতে বসতে এইভাবে পিটিয়ে ছাল তোলার জন্য কৃতজ্ঞ।’
ঘৃণার চেয়ে বড় কোনো মারণাস্ত্র নেই— কথাটি স্মরণ করে ফারুকী বলেন, ‘এইভাবে বোধহয় পুরোপুরি হবে না। কারণ একটা সিনেমা ভাবা হয়ে গেলে তো সেটা দুনিয়াতে এগজিস্ট করে গেল। বানানো হলে তো আরো শক্তভাবে এগজিস্ট করলো। আজ হোক, কাল হোক সেটা তো দেখে ফেলবে মানুষ। তাই বলি কি, এমন কিছু একটা করো যাতে ভাবনাটাও বন্ধ করে দেয়া যায়। এমন ওষুধ আবিষ্কার করো, হে রাষ্ট্র, যাতে কারো মনে ক্ষোভ জন্ম না নেয়! কারণ সম্মিলিত ক্ষোভের চেয়ে বিধ্বংসী কোনো অস্ত্র নাই! আরো খেয়াল রাখতে হবে ক্রমাগত চাপে এই ক্ষোভ যেন ঘৃণায় রূপ না নেয়। কারণ কে না জানে ঘৃণার চেয়ে বড় কোনো মারণাস্ত্র নাই।’
‘শনিবার বিকেল’ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন—জাহিদ হাসান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মামুনুর রশীদ, ইরেশ যাকের, ইন্তেখাব দিনার, গাউসুল আলম শাওন, নাদের চৌধুরী, ভারতের পরমব্রত চ্যাটার্জি, প্যালেস্টাইনের ইয়াদ হুরানি প্রমুখ।