আওয়ামীলীগের শাসনামলের টানা ১৬ বছর দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় খানজাহানআলী থানা বিএনপি এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থকরা ক্ষমতাসীন দলের রোষানলের শিকার হয়ে কোণঠাসা অবস্থায় ছিলেন। স্থানীয় আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতাদের রোষানলের শিকার হয়ে মামলা, হামলা, ভয়-ভীতি, হুমকি আর আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করতে হয়েছে তাদেরকে। দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের একাধিক মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলার আসামি হয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে। মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে অনেক নেতা-কর্মীকে এলাকা ছাড়তে হয়েছে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর থেকে উজ্জীবিত, উৎফুল এবং উচ্ছ্বসিত হয়েছে খানজাহানআলী থানা বিএনপি এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী সমর্থকরা। বৃদ্ধি পেয়েছে সাংগঠনিক গতি এবং তৎপরতা। নভেম্বরের মধ্যে থানার ৩ টি সংগঠনিক ইউনিটের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ লক্ষ্য ইতিমধ্যে খুলনা মহানগর বিএনপি থানার পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। ১৯ অক্টোবর সংগঠনের মহানগর কমিটির আহবায়ক এ্যাডঃ শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব মোঃ শফিকুল আলম তুহিন স্বাক্ষরিত নতুন এ আহবায়ক কমিটির অনুমোদন প্রদান করেন।
৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহবায়ক হয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা কাজী মিজানুর রহমান। সদস্য সচিব হয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা ও তৃণমূল থেকে উঠে আসা দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতা আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস। ৪ জন যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন মোঃ এমদাদুল হক, মোড়ল আতাউর রহমান, মোঃ জাহিদুল ইসলাম ও হেলাল শরীফ।
সদ্য অনুমোদিত আহ্বায়ক কমিটির আহবায়ক কাজী মিজানুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, দীর্ঘদিন পর পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন পাওয়ায় দলের তৃণমূল নেতা-কর্মী, সমর্থকরা উজ্জীবিত এবং উৎফুল্ল হয়েছে। তৃণমূলের ত্যাগী, পরীক্ষিত মামলা, হামলা, জেল জুলুম খাটা নেতা-কর্মীরা সদ্য অনুমোদিত আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী ২/১ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটির সভা ডেকে সাংগঠনিক ইউনিট গুলোর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর আওয়ামীলীগের দুঃশাসন থেকে দেশবাসী মুক্তি পেয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছর তাদের অত্যাচার, নির্যাতন, মামলা হামলার ভয়ে আমরা ঠিকমতো সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে পারিনি। ৫ আগস্টের পূর্বে আমরা খানজাহানআলী থানা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ মহানগর কমিটির কাছে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটির তালিকা অনুমোদনের জন্য দিয়েছিলাম। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে আহবায়ক কমিটি অনুমোদনে বিলম্ব হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন পাওয়ায় আমাদের নেতা কর্মী সমর্থকরা উজ্জীবিত হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটিতে শতভাগ তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মী স্থান পেয়েছে। কমিটির বাইরে বাকি যে সকল ত্যাগী নেতা-কর্মী রয়েছে খুব শীঘ্রই আমাদের সাংগঠনিক ইউনিট গুলোর কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে তৈরি করা হবে। ঐ সকল কমিটিতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে তিনি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে খানজাহান আলী থানার তিনটি সংগঠনিক ইউনিট যোগীপোল ইউনিয়ন, আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন ও কেসিসি ২ নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক ইউনিটের সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে। এরপর থানা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা গেজেট/এইচ