চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার প্রধান আসামি আশিষ রায় চৌধুরীকে মঙ্গলবার রাতে গুলশানের একটি বাড়ি থেকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘বনানী ট্রাম্পস ক্লাব নিয়ে সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে ক্লাবটির মালিক বান্টি ইসলাম ও আশিষ চৌধুরীর ঝামেলা ছিল। এ ছাড়া আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এরপর তিনজন মিলে সোহেলকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়।’
আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয় জানিয়ে র্যাব বলেছে, উচিত শিক্ষা দিতে হত্যা করা হয় চিত্রনায়ককে।
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি আশিষ চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
গুলশানের একটি বাসা থেকে মঙ্গলবার রাতে মদসহ আশিষকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০ ও র্যাব সদরদপ্তরের একটি দল।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে আশিষকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য তুলে ধরেন বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘বনানী ট্রাম্পস ক্লাব নিয়ে সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে ক্লাবটির মালিক বান্টি ইসলাম ও আশিষ চৌধুরীর ঝামেলা ছিল। এ ছাড়া আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এরপর তিনজন মিলে সোহেলকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়। আর সেটার দায়িত্ব দেয়া হয় ইমনকে।
‘ঘটনার দিন ইমন, আদনানসহ আরও কয়েকজন মিলে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে বলে র্যাবকে জানিয়েছেন আশিষ চৌধুরী।’
গত ২০ মার্চ সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য দুই আসামি হলেন ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান।
উচ্চ আদালতের আদেশে দীর্ঘদিন এ মামলার বিচার কাজ স্থগিত ছিল। ২০১৫ সালে এই মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। প্রত্যাহারের সেই আদেশসহ মামলার নথি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে আসে।
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী বিয়ে করেন ওই সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পারভীন সুলতানা দিতিকে। বিয়ের কিছু দিন পর তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। ওই সময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সোহেল চৌধুরী; জড়িয়ে পড়েন নেশার জগতে। অন্ধকার জগতের অপরাধীদের সঙ্গে শুরু হয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বের রেশ ধরেই খুন হন সোহেল চৌধুরী।
বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।