কয়েকদিন পরই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদে আনন্দের সীমা থাকে না কারো। এ সময় সবাই আয়োজন ও উৎসবের আনন্দে মেতে থাকেন। শহর থেকে গ্রামে ছুটে যাবেন অনেকে। কিন্তু আবহাওয়াজনিত কারণে ক্রমশ গরমের তীব্রতা বাড়ছে। এ কারণে ঈদের ছুটিতে জীবনযাপনে কিঞ্চিৎ ত্রুটি হলেই অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
এ সময় ছোটখাটো অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনা রোধে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা বাড়িতেই নেয়া যায়। সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
যেসব সমস্যা হতে পারে: আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য এ সময় ঠান্ডা, কাশি, সর্দি ও জ্বরের মতো সমস্যা হতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা-কাশি অল্প সময়ে ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্য অধিক মাত্রায় এ ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার অধিক খাবার গ্রহণের জন্য ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং ও বদহজম হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। বাসা-বাড়ির বাইরে চলাফেরার সময় ছোট ছোট আঘাত, কাটাছেঁড়া কিংবা হাত-পা ছিলে যাওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। শহর থেকে গ্রামে বা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার সময় গাড়িতে অনেকের মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব হয়।
যেসব প্রাথমিক ব্যবস্থা নেয়া উচিত: ঈদে স্বাভাবিকভাবে অনেক খাবারের আয়োজন থাকে। এ জন্য পছন্দের খাবার অনেক বেশ খাওয়া হয়। আবার বাসি খাবার খাওয়া বা অন্য কোনো কারণে ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং ও বদহজমও হতে পারে। তাই খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই সতর্ক হতে পারে। এ সময় বাসি বা গুরুপাক খাবার কম খাওয়া ভালো।
এমন অনেকেই আছেন যারা যাত্রাপথে রাস্তার খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। চলতি পথে রাস্তার খাবার সম্ভব হলে না খাওয়া ভালো। এ সময় শুকনা খাবার সঙ্গে রাখতে পারেন। আর শিশুদের খাবার সঙ্গে রাখা উচিত। তবে খাবার খাওয়ানোর আগে অবশ্যই দেখতে হবে, খাবার ভালো এবং গরম আছে কিনা। পানি পানের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ ও ফোটানো পানি পান করুন। সঙ্গে স্যালাইন রাখুন। ডায়রিয়া হলে কাজে লাগবে।
এছাড়া ঈদের ছুটিতে ঠান্ডা-কাশি ও জ্বরের জন্য সঙ্গে অ্যান্টিহিস্টামিন ও প্যারাসিটামল রাখুন। কাটাছেঁড়া ও আঘাতজনিত সমস্যায় ফার্স্ট এইড বক্স রাখতে পারেন। এতে গজ-ব্যান্ডেজ, ব্যান্ড-এইড ও অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম রাখবেন। শিশুরা যেন আগুন বা পানির দিকে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
হজমে বা গ্যাসট্রিকের সমস্যাও হতে পারে। এ জন্য গ্যাসের ওষুধ বা অ্যান্ডাসিডজাতীয় ওষুধ রাখতে পারেন সংরক্ষণে। আবার যাদের বমি বমি ভাব বা মাথা ঘোরার সমস্যা রয়েছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ রাখতে পারেন। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাদের খাবার কিংবা যাতায়াত, সবই খেয়াল রাখা জরুরি।
এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য সমস্যা রয়েছে তারা প্রয়োজন ওষুধ সেবনের পাশাপাশি যথেষ্ট পরিমাণ নিজের সরবরাহে রাখুন। আর যদি কোনো কারণে কখনো বেশি অসুস্থবোধ মনে হয়, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
খুলনা গেজেট/ এএজে