দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলিম বিশ্বের এই উৎসবের দিনে খুলনা মহানগরীতে ঈদের ছুটিতে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি ফাঁকা থাকলেও প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় জমিয়েছে খুলনাবাসী।
এ বছর ঈদের ছুটিতে খুলনা মহানগরীর আনন্দ ভ্রমণের অন্যতম জায়গা উল্লাস বিনোদন পার্ক। অপরদিকে পিছিয়ে নেই বনবিলাস চিড়িয়াখানা, হাদিস পার্ক, জাতিসংঘ শিশুপার্ক। তীব্র গরম উপেক্ষা করেই নগরবাসী ছুটে গেছেন এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।
অন্যান্য দিনের মতো চালু আছে খুলনা সেনানিবাসের বনবিলাস চিড়িয়াখানা, তবে সাদারণ দিনের তুলনায় দর্শনার্থীদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঈদের দ্বিতীয় দিনে খুলনা নগরবাসীসহ আশপাশের অনেক জায়গার মানুষ পরিবার পরিজনকে নিয়ে সময় কাটাতে আসছেন এই পার্কটিতে।
নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উল্লাস বিনোদন পার্ক। পার্কটিতে গিয়ে দেখা যায়, যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সেখানের প্রায় সকল রাইডেই সিরিয়াল দিয়ে উঠতে হয়েছে শিশুদের। লাইনে দাঁড়িয়ে রাইডে চড়তে গিয়ে অনেককে বিরক্তও হতে দেখা গেছে অনেক দর্শনার্থীকে।
তবে বাণিজ্যিক পার্ক হওয়াই প্রবেশমূল্য ও বিভিন্ন রাইডের ফি বেশি বলে মন্তব্য করেছেন দর্শনার্থীরা।
এছাড়াও খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর, হাদিস পার্ক, জাতিসংঘ শিশুপার্ক দর্শনার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ঈদের ছুটিতে এসব বিনোদনকেন্দ্র দর্শনার্থীদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
পার্ক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতবারের চেয়ে এবারের দর্শনার্থী সংখ্যা অনেক বেশি। ঈদের দিন (৩১ মার্চ) সকালে কেমন লোক সমাগম না থাকলেও বিকেলের পর থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।
খালিশপুর ওয়ান্ডার ল্যান্ড পার্কে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের চেয়ে সেখানেও দর্শনার্থী বেশি। তবে রাইডগুলো পুরাতন, খুব বেশি সংখ্যক রাইড না থাকা ও দর্শনার্থী আকর্ষণে উদ্যোগ না থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছে দর্শনার্থীরা।
তবে নগরীর অঘোষিত বিনোদন কেন্দ্র যেমন, ৭ নং ঘাট, রূপসা সেতু ও ময়ূরী আবাসিক এলাকায় মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো।
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা কেডিএ’র ময়ূরী আবাসিক এলাকায় এখনও কোন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় মুক্ত আবহাওয়ায় একটু প্রশান্তিতে ঘুরতে দেখা গেছে বন্ধু-বান্ধবসহ অথবা স্বপরিবারে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শহরতলীর বাইরের রাস্তাগুলোতেও ছিল মোটরসাইকেলসহ নিজস্ব বহনে যাতায়াতকারীদের। নগরীর অন্যান্য স্থানে আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতি বা নানা সংগঠনের ব্যানারে চলছে ঈদ মেলা। সেসব জায়গায়ও ভিড় ছিল উপচেপড়া। তবে শিশুপার্ক বন্ধ করে বাণিজ্য করার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
নগরীর ৭ নং ঘাটে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী রাফিদুল ইসলাম রাজুর সাথে কথা হয় খুলনা গেজেটের তিনি বলেন, খুলনার দেশের তৃতীয় বৃহত্তম বিভাগ হলেও এখানে ভালো কোন পর্যটনের সুব্যবস্থা নেই। যে সকল বিনোদন কেন্দ্র আছে তাও প্রায় অচল ও মানহীন। প্রতিটা পার্কেই অধিক প্রবেশ মূল্য ও রাইডের অনেক ফি নেওয়া হয়। তাই দর্শনার্থীরা পার্ক গুলোতে না গিয়ে রূপসা ব্রিজ, ৭ নং ঘাটে সময় কাটায়।
খুলনা গেজেট/এনএম