খুলনা, বাংলাদেশ | ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১১ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  পিরোজপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে শিশুসহ ৮ জন নিহত

ঈদকে সামনে রেখে যশোর বড়বাজারে চাঁদাবাজির অভিযোগ

জাহিদ আহমেদ লিটন, যশোর

ঈদকে সামনে রেখে যশোরের বড়বাজারে নিবর চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। ঈদ ও স্বেচ্ছাসেবকদের কথা বলে দোকান প্রতি ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।

চলতি সপ্তাহে বাজার থেকে এ স্টাইলে দু’লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগে জানিয়েছে।

ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, যশোরের বড়বাজারে ছোটবড় মিলিয়ে কমপক্ষে এক হাজার দোকান রয়েছে। এ বাজারটি দুটি ভাগে বিভক্ত করে দুটি পক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। একটি পক্ষে আওয়ামী লীগের একজন হাইব্রিড নেতা নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের পক্ষের লোকজন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে টাকা আদায় করে থাকে। এক্ষেত্রে বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের কথা মেনেই ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। আর এ সুযোগটি গ্রহণ করেছে বাজার এলাকায় ঘোরাফেরা করা কতিপয় ব্যক্তি। ঈদকে সামনে রেখে তারা বিভিন্ন দোকানে গিয়ে নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। চলতি সপ্তাহে বড়বাজার থেকে ওইসব ব্যক্তিরা দু’লক্ষাধিক টাকা আদায় করেছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগে জানিয়েছে। গত ২৬ এপ্রিল বিকেল থেকে চাঁদা আদায়ে ব্যবসায়ী নামধারী কতিপয় ব্যক্তি ও আদায়কারী মাঠে নামে। তারা বিভিন্ন দোকানে গিয়ে জানায়, বাজারের স্বেচ্ছাসেবক বা স্বেচ্ছাসেবক লীগে বোনাস দিতে হবে, এজন্য তাদেরকে টাকা দিতে হবে। এ টাকার পরিমাণ ৫০ থেকে ২শ’ টাকা। এতে কয়েকজন দোকানি অনিহা প্রকাশ করলে তাদের জানিয়ে দেয়া হয়, ৫০ টাকা হারে সবাইকে দিতে হবে। ফলে বাড়তি ঝামেলা এড়াতে ও বেশি কথার ভয়ে ব্যবসায়ীরা অনিচ্ছা সত্তেও তাদেরকে টাকা তুলে দেয়। এদিনে টাকা আদায়ের পরিমাণ ছিল কমপক্ষে একলাখ টাকা। এর দু’দিন আগে অপর একটি পক্ষ একই স্টাইলে ঈদ বোনাস হিসেবে বিভিন্ন দোকানির কাছ থেকে আরো লক্ষাধিক টাকা আদায় করেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে।

তাদের অভিযোগ, বড় বাজারের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী নিরিহ প্রকৃতির ও দুটি পক্ষের হাতে জিম্মি। এ কারণে তারা এ জাতীয় কোন বিষয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। বাজার এলাকায় ঘোরাফেরাকারী পক্ষের লোকজন এলেই তারা দাবিকৃত টাকা প্রদান করতে বাধ্য হয়।

বিষয়টি নিয়ে শহরের বড়বাজার এইচএমএম রোড কালীবাড়ি এলাকার একজন মুদিখানা দোকানি বলেন, রমজান মাসের ১৫ রোজার পর থেকে বাজার এলাকায় নিবর চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। বর্তমানে এর পরিমাণ বেড়ে গেছে। বিভিন্ন অজুহাতে এলাকার প্রভাবশালী দু’জনের নাম ভাঙিয়ে চিহিৃত কয়েক ব্যক্তি চাঁদাবজিতে লিপ্ত হয়েছে। এ কাজের প্রতিবাদ করলেই তারা নানা ঝামেলার সম্মুখিন হন। এ জন্য কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তারা চোখ বন্ধ করে ৫০ থেকে একশ’ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে পার পেয়ে যায়।

তিনি বলেন, বাজার এলাকার কমপক্ষে এক হাজার দোকান থেকে একশ’ টাকা হারে চাঁদা আদায় করলেই তার পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ টাকা। ফলে ঈদের বাড়তি খরচে ওইসব ব্যক্তিদের কোন সমস্যা হচ্ছে না। চাইলেই টাকা হাতে পেয়ে যাচ্ছে।

এইচএমএম রোডের অপর একজন কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, বড়বাজার এলাকা যারা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন, তাদেরকে ঈদের সময় বিভিন্ন স্থানে উপঢৌকন পাঠাতে হয়। এরমধ্যে গণমাধ্যম নেতাও রয়েছেন। এ টাকাতো তারা নিজের পকেট থেকে দেবেন না। ওইসব ব্যক্তিরা তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে আমাদের কাছ থেকেই আদায় করে উপঢৌকন পাঠিয়ে থাকেন।

এ ব্যাপারে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদাবজি করলে তাকে সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে তুলে দেবার জন্য তিনি অনুরোধ জানান। একইসাথে তিনি বিষয়টি সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করলে তারা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ কাজে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

যশোর ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রূপন কুমার সরকার বলেন, এ জাতীয় ঘটনা তাদের জানা নেই। যদি হয়ে থাকে তাহলে তাদেরকে গোপনে ইনফরমেশন দেয়া হলে তারা এ বিষয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!