ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইয়াস সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ওড়িশায় আঘাত হেনেছে। আমরা বৈজ্ঞানিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি, আমাদের দেশে এর সরাসরি কোনো প্রভাব পড়বে না।’
ভারতের ওড়িশায় আঘাত হেনে উপকূল অতিক্রম করছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। এতে বাংলাদেশের উপকূলীয় ২৭টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি উপকূলীয় ১৪ জেলায় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরার সময় এ তথ্য জানান।
ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলো হচ্ছে শ্যামনগর, আশাশুনি, কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, শরণখোলা, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, মঠবাড়িয়া, বরগুনা সদর, পাথরঘাটা, আমতলী, পটুয়াখালী সদর, গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, দশমিনা, মির্জাগঞ্জ, কলাপাড়া, চরফ্যাশন, মনপুরা, তজুমদ্দিন, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, ভোলা সদর, বামনা, বেতাগী, লালমোহন, হাতিয়া, রামগতি ও কমলনগর।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পটুয়াখালী জেলায় জোয়ারের পানি বিপৎসীমার নিচে আছে। সেখানে কোনো ঝড়বৃষ্টি নেই। ১৭২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৪ হাজার মানুষ আশ্রয় নিলেও তারা এখন নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন।’
তিনি জানান, সাতক্ষীরায় জোয়ারের পানি ৩ থেকে ৬ ফুট উঁচুতে প্রবাহিত হচ্ছে। কয়েকটি বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষ নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন।
বরগুনায় জোয়ারের পানি ২ থেকে ৩ ফুট উঁচুতে রয়েছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা ৫২০ জন বাড়িতে ফিরে গেছেন। সামান্য বৃষ্টি থাকলেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি নেই।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ঝালকাঠিতে পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। পিরোজপুরে জোয়ারের পানি ৩ ফুট উঁচুতে রয়েছে। এখানে পানির তোড়ে মাছের ১০ থেকে ১২টি ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজিবাগান।
বরিশালে তেমন ক্ষয়ক্ষতি নেই। ভোলায় ঝড় হয়েছে। পানি ২ থেকে ৩ ফুট ওপরে উঠলেও তা এখন নেমে গেছে। কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে ২৫০টি। পানিতে ভেসে গেছে ৯০০ গরু-মহিষ। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা ২ হাজার মানুষ বাড়ি ফিরে গেছেন।
তিনি জানান, বাগেরহাটে তিনটি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি আছে, তবে স্বাভাবিক। চাঁদপুরে রোদ ছিল। কোনো ক্ষয়ক্ষতি নেই। লক্ষ্মীপুরে সামান্য জোয়ারের পানি আছে। খুলনায় ক্ষয়ক্ষতি নেই। জোয়ারের পানি নেমে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজন বাড়ি ফিরে গেছেন।
ফেনীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও ঝড়ে ট্রলার ডুবে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। চট্টগ্রামে পানি বাড়ছে, তবে ক্ষয়ক্ষতি নেই। নোয়াখালীতে জোয়ারের পানি ৪ ফুট পর্যন্ত উঁচুতে উঠলেও পরে সেটি নেমে গেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগে থেকেই জেলা প্রশাসকদের কাছে খাদ্য ও অর্থ দেয়া আছে। তারা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। ৯টি জেলার ২৭টি উপজেলায় ১৬ হাজার ৫০০ শুকনা খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ রয়েছে।’
খুলনা গেজেট/ এস আই