ঝিনাইদহে ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে বিকৃত যৌনাচার থেকে এক সপ্তাহে তিনজনকে হত্যার ভয়ঙ্কর তথ্য। কাজটি করেছেন ইয়াদ আলী নামে এক মাদকাসক্ত ব্যক্তি।
ইয়াদ আলী নড়াইল সদর উপজেলার ডুমুরতলা গ্রামের মৃত চাঁন মোল্লার ছেলে। তিনি ৪-৫ মাস আগে ঝিনাইদহে এসেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
জানা গেছে, ১০ ফেব্রুয়ারি পোড়াহাটি গ্রামে এক নারী ধর্ষণচেষ্টায় বাধা দেওয়ায় তাকে হত্যা করে পালিয়ে যাচ্ছিলেন ইয়াদ আলী। এ সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে র্যাবে সোপর্দ করে। ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে থানায় মামলা করে। পরে তদন্তে নামে পুলিশ। আঘাতের ধরন একই রকম হওয়ায় সন্দেহ হয় তাদের। শুরু করে জিজ্ঞাসাবাদ। এক পর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন ইয়াদ আলী। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখান কীভাবে তাদের হত্যার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার এম কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন ইয়াদ আলী। বিকৃত যৌনাচারে বাধা দেওয়ায় ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে স্কুলের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা ইলিয়াস পাটোয়ারিকে টিউবওয়েলের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। একইভাবে হত্যা করা হয় লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তিকে। তাকেও লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় ইয়াদ।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সোহেল রানা বলেন, ইয়াদ আলীর এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারছি সে একজন মাদকাসক্ত। ঝিনাইদহে তিন ঘটনার মধ্যে দুটিতে হত্যা ও একটিতে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছিল। এখন তিনটিই হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়াদ আলী আরও কোনো হত্যার সঙ্গে জড়িত আছে কিনা তা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার জানায়, ওই নারীকে হত্যার পর আঘাতের ধরন দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। এর আগে ৬ জানুয়ারি তেতুলতলা এমকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে ইলিয়াস পাটোয়ারি ও ৯ জানুয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিঁড়ির নিচ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদেরও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা ইয়াদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে ওই দুটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেন।