নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুমতি ছাড়া আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বদলি বা ছুটি না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি শনিবার (২৯ এপ্রিল) কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আইনের ধারা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের সময়সূচি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর নির্বাচনের ফলের গেজেট প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে সাংবিধানিক সংস্থার কোনো কর্মকর্তাকে বদলি করা যাবে না।
কমিশনের চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৫ মে গাজীপুর, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল, ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। ভোটগ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়/বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হবে। তা ছাড়া নির্বাচন পরিচালনার অনেককে অন্যান্য দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। ভোটগ্রহণের জন্য সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্য থেকেও দায়িত্ব দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। তা ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থার স্থাপনা/অঙ্গন ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
সংশ্লিষ্ট আইনের ধারা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই বিধিমালার বিধি ৮৯ অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সূচি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর নির্বাচনের ফলের গেজেট প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে এসব কর্মকর্তাকে বদলি করা যাবে না। অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ইসির অধীন প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আগের মতো এবারও কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আশা করছে কমিশন। এজন্য কর্মকর্তাদের বদলি বা ছুটি কিংবা অন্য দায়িত্ব না দিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগকে নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধ করা হলো।
পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা চেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কাছে আরেকটি চিঠি দিয়েছেন কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান।
এতে বলা হয়, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর (সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও জেলা পরিষদ) এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা আশা করছে ইসি। এ জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া নির্বাচনী আইন ও বিধিমালা প্রতিপালনেও উল্লিখিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের সহায়তা দেওয়া আবশ্যক।
৩ এপ্রিল ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২৭ এপ্রিল, বাছাই হবে ৩০ এপ্রিল, বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল ২ থেকে ৪ মে, আপিল নিষ্পত্তি ৫ থেকে ৭ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহার হবে ৮ মে, প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ মে। ভোটগ্রহণ করা হবে ২৫ মে। খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৬ মে। বাছাই হবে ১৮ মে, বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিলের শেষ সময় ২১ মে; আপিল নিষ্পত্তির শেষ সময় ২৪ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৫ মে। ভোটগ্রহণ হবে ১২ জুন। রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৩ মে। বাছাই হবে ২৫ মে। আপিলের শেষ সময় ২৮ মে, আপিল নিষ্পত্তির শেষ দিন ৩১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১ জুন এবং ভোটগ্রহণ হবে ২১ জুন।
খুলনা গেজেট/কেডি