খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক শুরু

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের আভাস, ইরাকে মার্কিন দূতাবাস আংশিক খালি করা হচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে তাদের দূতাবাস থেকে ‘অপ্রয়োজনীয় কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের’ সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক নিরাপত্তা হুমকি ও মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে একটি যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে আভাস মিলছে। যদি সেটা হয়, তাহলে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব স্থাপনা আছে তা টার্গেট করতে পারে ইরান। তেলের সরবরাহও বিঘ্নিত হতে পারে। তাতে বিশ্ব অর্থনীতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির যতটা ক্ষতি করছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে বিশ্বের। কারণ, ইরানের অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ মানে পুরো অঞ্চল আক্রান্ত হওয়া। তেলের বাজার অশান্ত হওয়া। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে যে ইসরাইল খুব শিগগিরই ইরানে একটি সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে। এই সম্ভাবনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে কিছু নাগরিক ও কূটনীতিকদের সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে পাল্টা আঘাত হিসেবে ইরাকে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের স্থাপনাগুলিকে সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনা করতে পারে ইরান। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে মার্কিন আলোচক স্টিভ উইটকফ আগামী রবিবার ওমানে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে ষষ্ঠ দফার আলোচনা করতে যাচ্ছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনার গতি স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে, তিনি ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম থামবে বলে এখন আগের মতো আশাবাদী নন।

ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, এ অঞ্চলটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই আমরা কিছু আমেরিকানকে সরে যেতে বলেছি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমরা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেব না। একইসঙ্গে তিনি স্বীকার করেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার সাম্প্রতিক ৪০ মিনিটের ফোনালাপ ছিল ‘উত্তেজনাপূর্ণ’।

ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি আলোচনায় ফল না আসে এবং যুক্তরাষ্ট্র সামরিক অভিযান শুরু করে, তাহলে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে। তিনি বলেন, আমরা বসে থাকব না।

রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ কুয়েত, বাহরাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পরিবারদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাহারের অনুমোদন দিয়েছেন। এই ঘোষণা ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তেলের দাম ৪ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। কারণ বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই উত্তেজনা সরবরাহ শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এর প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।

বুধবার যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস থেকে এক সতর্কতা জারি করে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলও হুমকির মুখে পড়তে পারে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিনিদের আংশিক সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তকে কেউ কেউ বাস্তব নিরাপত্তা হুমকির প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখলেও, অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, এটি রাজনৈতিক বার্তাও বহন করছে।

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা যখন টানাপড়েনে, তখন এই পদক্ষেপ তেহরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করার একটি কৌশল হিসেবেও ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!