ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত দেশটির বৃহত্তম বাণিজ্যিক বন্দর শহীদ রাজিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবারের এই বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন আরও এক হাজারের বেশি মানুষ। রোববার (২৭ এপ্রিল) ইরানি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণে বন্দরের পার্শ্ববর্তী অনেক ভবনের জানালা এবং ছাদ উড়ে গেছে। এছাড়া বন্দরের আশপাশে রাখা অনেক গাড়ি ধ্বংস হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ৫০ কিলোমিটার দূরেও বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয় জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এই ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, তীব্র বিস্ফোরণের পর সেখানে আগুনে লেলিহান শিখা উড়ছে। বিস্ফোরণস্থল থেকে লোকজনকে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যেতে দেখা যায়। এ সময় বিস্ফোরণের কারণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ির অবিশষ্টাংশের আঘাতে অনেককে আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছেন, বিস্ফোরণের পর বন্দুরের গুদাম ধোঁয়া, ধূলিকণা এবং ছাইয়ে ঢেকে যায়। আমি টেবিলের নিচে পড়ে গিয়েছিলাম। বিস্ফোরণে উড়ে টেবিলের নিচে গিয়ে পড়েছিলাম।
আকাশ থেকে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বন্দরের কমপক্ষে তিনটি স্থানে আগুন জ্বলছে। ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগুন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। ওই অঞ্চলের স্কুল ও সরকারি-বেসরকারি অফিস রোববার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সামুদ্রিক ঝুঁকি নির্ণয়বিষয়ক একটি বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বলেছে, বন্দরের বিস্ফোরণ স্থলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহৃত সলিড ফুয়েলের উপস্থিতি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিস্ফোরণে হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। এই ঘটনায় সরকারি তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তদন্ত দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ওই অঞ্চলে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন তিনি।
সূত্র: বিবিসি, এএফপি
খুলনা গেজেট/এএজে