ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আবাদানে প্রাণঘাতী ভবন ধসের ঘটনায় দ্বিতীয় রাতের মতো ক্ষুব্ধ জনতার বিক্ষোভ হয়েছে। ভবন নির্মাণে কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তারা। তবে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ইরানের পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার এবং আকাশে ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে।
শনিবার দেশটির সংবাদ সংস্থা ফারস নিউজ অ্যাজেন্সি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশটির তেল সমৃদ্ধ খুজেস্তান অঞ্চলে আবাদান শহরের অবস্থান। সেখানকার কর্মকর্তারা বলেছেন, সোমবার আবাদানের ১০ তলা আবাসিক এবং বাণিজ্যিক ভবন ধসের ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ভবন ধসের এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩৭ জন। নিরপত্তা বিধি লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়ায় এখন পর্যন্ত আবাদানে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিরাপত্তা সতর্কতা উপেক্ষা করা হয়েছে, এমন অভিযোগের মধ্যে দেশটির দুর্যোগ তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ আবাদানের বর্তমান এবং সাবেক মেয়র ও পৌরসভার অন্যান্য কর্মচারীদের আটক করেছে।
ফারস নিউজ অ্যাজেন্সি বলছে, শুক্রবার রাতে আবাদানে ভবনটির ধ্বংসাবশেষে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টার সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ এবং ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। ভবন ধসের স্থানে এখনও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করায় লোকজন পালিয়ে যাচ্ছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে গুলি না ছোড়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু এর মাঝেও গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে এই ভিডিও ফুটেজের সত্যতা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
খুজেস্তানের বন্দর নগরী মাহশাহরের একটি ভিডিওতে বিক্ষোভকারীদের চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘তারা তেল ও গ্যাস চুরি করেছে। এখন আমাদের রক্ত নিচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু পোস্টে বলা হয়েছে, আবাদানের বিক্ষোভকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে খুজেস্তানের পাশাপাশি মধ্য-ইরানের শাহিন এবং দক্ষিণাঞ্চলের শিরাজ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায়ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব পোস্টের সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
এর আগে, শুক্রবার ইরানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ভবন নির্মাতা, ঠিকাদার এবং তত্ত্বাবধায়ক সংস্থার ‘ব্যাপক দুর্নীতি’ এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী।