সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইরান। ইরানের ছোড়া এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ৯৯ শতাংশই ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল। আর এ হামলা চালাতে ইরানের যে ব্যয় হয়েছে তার চেয়ে ঠেকাতে ইসরায়েলের খরচ হয়েছে দ্বিগুণের বেশি।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ওপর হামলায় ১৭০টি ড্রোন, ৩০টি ক্রুস মিসাইল এবং ১১০টির বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান।
ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, ইরানি একটি শাহেদ ড্রোনের মূল্য ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলার, একটি ক্রুস মিসাইলের দাম ৬৫ লাখ ডলার এবং একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের দাম ৩০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে হামলা চালাতে ইরান ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারের ড্রোন, ১৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ক্রুস মিসাইল এবং ৩৩ কোটি ডলারের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যয় করেছে। অর্থাৎ, পুরো হামলা চালাতে ইরানের খরচ হয়েছে ৫৮ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
এদিকে ইসরায়েলের সেনাপ্রধানের সাবেক আর্থিক উপদেষ্টা ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল রাম আমিনাকের বরাত দিয়ে দেশটির দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনথ জানিয়েছে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ঠেকাতে এক রাতেই ইসরায়েলের খরচ হয়েছে প্রায় ১৩৫ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা)।
তুর্কি টেলিভিশন চ্যানেল টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের সেনাপ্রধানের সাবেক আর্থিক উপদেষ্টা আমিনাকের মতে, ইরানের হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) বা ১ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন থেকে ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয় নেতানিয়াহু সরকারের।
আমিনাক বলেন, ‘আমি কেবল ইরানের হামলা মোকাবিলার হিসাব বলছি। হামলায় কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা বলছি না।’
ইসরায়েলের সেনাপ্রধানের সাবেক এই আর্থিক উপদেষ্টা জানান, ইরানের ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ‘অ্যারো’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতিটির দাম ৩৫ লাখ ডলার। ‘ম্যাজিক ওয়ান্ড’ নামে আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্রও সে রাতে ব্যবহার করা হয়। যার প্রতিটির দাম ১০ লাখ ডলার।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র হাগারি বলেন, ‘ইরানের ছোড়া ৩০টির মধ্যে ২৫টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়। ১২০টির বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একইভাবে আটকানো হয়।’
বলা যায়, ইরানের ৫৮ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারের হামলা ঠেকাতে ইসরায়েল ব্যয় করেছে প্রায় ১৩৫ কোটি ডলার। সেই হিসাবে ইরানের প্রতি ডলার সমমূল্যের হামলা ঠেকাতে ইসরায়েল ব্যয় করেছে ২ দশমিক ২৯ ডলার, যা দ্বিগুণেরও বেশি।
খুলনা গেজেট/এইচ