ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেসরকারীভাবে জয়ী হয়েছেন দেশটির বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সাবেক জেনারেল প্রাবোও সুবিয়ান্তো। গণনাকৃত ভোটের ৫৮ শতাংশেরও বেশি পেয়েছেন সুবিয়ান্তো। খবর রয়টার্স।
৭২ বছর বয়সী বিতর্কিত এই জেনারেল এর আগেও দুই বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। দেশটির নির্বাচনে কোনো প্রার্থী প্রথম ধাপে যদি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পান, তাহলে তাকে আর রান-অফ বা দ্বিতীয় ধাপে লড়তে হয় না। সুবিয়ান্তো যে পরিমাণ ভোট পেয়েছেন তাতে তিনি প্রথম ধাপের ভোটযুদ্ধেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়ে গেছেন। এদিকে সুবিয়ান্তো নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করলেও নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য সমর্থকদের আরও ধৈর্য ধারণের পরামর্শ দিয়েছেন।
পোলস্টারের তথ্য অনুযায়ী, সুবিয়ান্তোন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও জাকার্তার সাবেক গভর্নর অ্যানিস বাসওয়েদান ২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় এবং সেন্ট্রাল জাভার সাবেক গভর্নর গঞ্জার প্রানোয়ো ১৭ শতাংশ ভোটে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটির নেতৃত্বের যুদ্ধে এগিয়ে থাকা প্রাবোও সুবিয়ান্তোর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ড নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এক প্রজন্ম আগে জেনারেল সুহার্তোর স্বৈরশাসনের সময় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ছিলেন সুবিয়ান্তো। তিনি জনপ্রিয় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন।
দেশটিতে স্থানীয় সময় বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত টানা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলে। পরে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। দেশটিতে ৮ লাখের বেশি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সর্বোচ্চ ২০ লাখ ভোটার। ভোটকেন্দ্রে ৫৭ লাখের বেশি ব্যক্তি নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোটাররা আজ প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি ভাইস প্রেসিডেন্ট, ৫৮০ জন পার্লামেন্ট মেম্বার, ২০ হাজারের বেশি আঞ্চলিক আইনপ্রণেতাও নির্বাচন করবেন। এসব নির্বাচনে লড়ছেন প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার প্রার্থী। ভোট উপলক্ষে ২৮ কোটি জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় আজ সরকারি ছুটি রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন দেশটির দুই মেয়াদের প্রেসিডেন্ট উইদোদো। তবে দেশটির সাংবিধানিক বিধান হলো, এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন না। এই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে উইদোদো আর প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে পারছেন না।
এর আগে, সুবিয়ান্তো এক নির্বাচনী সমাবেশে তার সমর্থকদের বলেছিলেন, ‘আমরা ইন্দোনেশিয়ার সব মানুষের শান্তি-সমৃদ্ধির জন্য লড়াই অব্যাহত রাখবো। আগের প্রেসিডেন্টরা ইতোমধ্যে যা করেছেন, তাও আমরা এগিয়ে নিয়ে যাবো।’ ১৯৯৮ সালে জেনারেল সুহার্তোর একনায়কত্বের অবসানের পর দেশটিতে পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা গেজেট/কেডি