খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ | ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে
  চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শিপইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ১২
  নিরবচ্ছিন্নভাবে চলছে সব তৈরি পোশাক কারখানা, কাজে ফিরেছেন পোশাক শ্রমিকরা; শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার

ইন্টানেট বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে প্রি পেইড বিদ্যুৎ গ্রাহক

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরেও ইন্টারনেট ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। এ কারণে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন ও বিদ্যুতের প্রি পেইড মিটার রিচার্জ ব্যবস্থা। হাজারো মানুষ এ সমস্যা নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে ছুটাছুটি করছেন। একইসাথে অনলাইন ভিত্তিক সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। এ আন্দোলনকারীরা রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দিয়েছে। বৃহস্পতিবার এ আগুনে ঢাকা মহাখালীর ইন্টারনেট ডাটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে সারাদেশে ইন্টানেট বন্ধ হয়ে যায়।

এতে বেকায়দায় পড়েছে সারাদেশের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। তারা প্রয়োজনীয় কাজে বিকাশে টাকা লেনদেন করতে পারছেন না ও বিদ্যুৎহীন রাত কাটাচ্ছেন। ইন্টারনেট সচল না থাকায় এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে স্থবিরতা বিরাজ করছে।

যশোর শহরের ঘোপ জেল রোড কাঠেরপুলের বিকাশ ব্যবসায়ী বিপ্লব জানান, গত চারদিন যাবৎ তার ব্যবসা বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। ইন্টারনেট না থাকায় তার ব্যবসা নেই বললেই চলে। এর আগে তিনি বিকাশের লেনদেন নেটের মাধ্যমে করেছেন। কিন্তু নেট বিপর্যয়ের কারণে গত চারদিন তাকে বিকাশে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে লেনদেন করতে হচ্ছে। যদিও বিকাশে ম্যানুয়াল পদ্ধতি রয়েছে। অথচ এতেও তাদেরকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। নেট বন্ধ থাকায় বিকাশের সার্ভার ভালো কাজ করছে না। অনেকবার চেষ্টা করার পর টাকা পাঠানো বা উঠানো যাচ্ছে না। এসব কারণে মানুষ বিকাশে টাকা লেনদেন করতে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকছেন। তাদেরকেও এ কাজে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ বিষয়ে তারা যোগাযোগ করলে বিকাশ কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইন্টারনেট ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হলে তাদের এ সমস্যার সমাধান হবে না।

শহরের পোস্ট অফিসপাড়ার ব্যবসায়ী নূর ইসলাম, দড়াটানামোড়ের আফজাল হোসেন ও ঘোপ বেলতলার জাহাঙ্গীর আলম একই কথা বলেন। একইসাথে অনলাইন ভিত্তিক সকল ব্যবসা গত দু’দিন মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

এদিকে, ইন্টানেট না থাকায় সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েছেন যশোর শহরের হাজারো প্রি পেইড মিটার গ্রাহকরা। গত চারদিন তাদেরকে মিটার রিচার্জ করতে গিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। ইন্টারনেট না থাকায় বিকাশ ব্যবসায়ীরা মিটার বিচার্জ করে দিতে পারেননি। ফলে অনেকে বাড়ি ফিরে গিয়ে অন্ধাকারে বসে থেকেছেন। অথচ এসময়ে বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব সার্ভার ব্যবহার করে গ্রাহকদের টাকা রিচার্জ করে দিয়েছে। কিন্তু এখানেও ছিল গ্রাহকদের ব্যাপক ভিড়। তারা ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে মিটারে টাকা রিচার্জ করতে বাধ্য হয়েছেন। যদিও বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষ এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। শনিবার তারা বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গ্রাহকের মিটার রিচার্জের ব্যবস্থা করেছেন।

এ বিষয়ে গ্রাহক জুবায়ের হোসেন বলেন, ইন্টারনেট সমস্যার কারণে তার বিদ্যুতের রিচার্জ নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েন। পরে তিনি আরেকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন বিদ্যুৎ অফিসে গেলে মিটার রিচার্জ করা যাচ্ছে। এরপর দুপুর ১২টার দিকে তিনি বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে রিচার্জ করতে পেরেছেন। একই কথা বলেন শহরের ঘোপ বেলতলা এলাকার গ্রাহক বায়োজিত হাসান পিয়াল।

তিনি বলেন, এখনতো মিটারে টাকা ভরলে কখন শেষ হয়ে যায় বোঝা যায় না। কারেন্ট চলে গেলে সন্দেহ হয় টাকা ফুরিয়ে গেছে। তখন বিচার্জ করার পর ফের বিদ্যুৎ চালু হয়। মঙ্গলবার একঘন্টা শহরের চিত্রামোড়ের বিদ্যুৎ অফিসে লাইনে দাড়িয়ে থেকে মিটার রিচার্জ করতে সক্ষম হয়েছি। এরআগে শহরের বিভিন্ন এলাকার বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে মিটার রিচার্জ করতে পারেননি। তিনি মিটার রিচার্জ ব্যবস্থা আরো সহজ করার দাবি জানান। এ জাতীয় কারণে প্রি পেইড মিটার নিয়ে গ্রাহকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে যশোর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান প্রধান বলেন, জরুরি অবস্থা বিবেচনা এনে আমরা শনিবার থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গ্রাহকের মিটার রিচার্জের ব্যবস্থা করেছি। এ কাজে তারা তাদের নিজস্ব সার্ভার ব্যবহার করছেন। ফলে রিচার্জে তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে না। তারপরও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে গ্রাহকের যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!