অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আজকের দিনটি ছিল শুধুই বাংলাদেশের স্পিনারদের। বিশেষ করে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের। বাংলাদেশের ইতিহাসগড়া জয়ের মূল নায়ক বাঁহাতি স্পিনার নাসুম। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম জয়টিতে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন নাসুম।
মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে নাসুম আহমেদ নিজের ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৯ রান খরচায় নিয়েছেন ৪ উইকেট। যা তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার। এর আগের চার ম্যাচে সাকুল্যে ২ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। আজ অসিদের বিপক্ষে এক ম্যাচেই নিলেন ৪টি। যার স্পিন ঘূর্ণিতে একের পর এক উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইনিংস থেমে গেছে মাত্র ১০৮ রানে। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ২৩ রানের ব্যবধানে জিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ঐতিহাসিক এক জয়ের স্বাদ।
দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে জশ ফিলিপকে মায়াজালে ফেলেন নাসুম আহমেদ। অস্ট্রেলিয়ার উইকেটের মিছিলে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মিচেল মার্শ। তাকে ফিরিয়ে উল্লাসে ভাসালেন নাসুম আহমেদ। অজিদের দলীয় ৮৪ রানের মধ্যে ৪৫ রানই ছিল তার । এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন দারুণভাবে। ১৬ ওভারের তৃতীয় বলে স্লগ সুইপ করেছিলেন; ১০-১৫ গজ দৌড়ে এসে ছোট ডাইভে তালুবন্দি করেন শরিফুল। ৪টি চার ও ১টি ছয়ে ৪৫ বলে ৪৫ রান করে ফেরেন মার্শ। এটি নাসুমের চতুর্থ শিকার।
নাসুমের তৃতীয় উইকেট ছিল প্রত্যাশিত। নাসুমের বল ঠেকিয়ে পা দিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে আউট হন অ্যাগার। ইনিংসের ১৪ ওভারের দ্বিতীয় বলে শর্ট ফাইনে খেলার চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু তার পা ভেঙে দেয় স্ট্যাম্প। আউট হওয়ার আগে অ্যাগারের ব্যাট থেকে আসে ১২ বলে ৭ রান। এর আগে ম্যাথু ওয়েডকে সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন এই স্পিনার।
নাসুম বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া দলকে হারানোর ব্যাপারে একটাই চাওয়া ছিল যেন আমরা জিতি। কাল আমি দোয়াও করছিলাম যে, আল্লাহ এখনও আমরা একটা ম্যাচও জিতিনি, যেন এবার জিততে পারি। তো সবাই মিলে চেষ্টা করেছি, আলহামদুলিল্লাহ সফল হয়েছি। সবার ইচ্ছা ছিল ভালো কিছু একটা করে দেখানোর। ওই ইচ্ছের কারণে আমরা সফল হয়েছি।’
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার খুব বেশি বড় নয় নাসুমের। চলতি বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক। শুধুমাত্র টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ক্যাপ পরা এই বাঁহাতি স্পিনার জিম্বাবুয়ে সফরে এক ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন বটে, তবে সুবিধা করতে না পারায় একাদশ থেকে বাদ পড়েন। ঘরের মাঠে অজি বধে নাসুমের ওপরেই আস্থা রাখে টাইগার টিম ম্যানেজম্যান্ট। সে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন সিলেটের এই ক্রিকেটার।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার আগে অজিদের বিপক্ষে এই ফরম্যাটে জয় পেতে প্রাণপণ দোয়া করেছিলেন স্পিনার নাসুম আহমেদ।
নাসুম বলেন, ‘কালকে (ম্যাচের আগের দিন) যখন নেটে বল করছিলাম তখন কোচ আমাকে বলল যে কাল তুমি খেলবে। তাই তোমার ওপর অনেক দায়িত্ব। সেখান থেকেই আমি ভাবছিলাম খেললে আমি কি করব। শেষ একটা ম্যাচে একটু বাজে বল করেছি।’