১৯২১ সালের ১১ ডিসেম্বর পাকিস্তানের খাইবারের কিস্সাখাওয়ানিবাজার এলাকায় জন্ম নেওয়া মহম্মদ ইউসুফ খানই আজকের বলিউডের কিংবদন্তী অভিনেতা দিলীপ কুমার। পিতার নাম গোলাম সারওয়ার ছিলেন একজন ফল ব্যবসায়ী। মায়ের নাম আয়েশা বেগম।
১৯৩০ সালে পরিবারের ১২ সদস্যকে নিয়ে মুম্বই আগমন। নাসিকের বার্নস স্কুল থেকে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা। ১৯৪০ সালে মুম্বইয়ে এক ক্যান্টিন মালিক।সেখান থেকে ইউসুফ ফল সরবরাহ করতেন। তাঁর ঐ ক্যান্টিনের স্যাণ্ডুইচ মানুষকে খুব আকর্ষণ করতো। ১৯৪৩ সালে বোম্বে টকিজের মালিকাধীন এক অভিনেত্রী দেবিকা রানী ও তাঁর স্বামী হিমাংশু রাই ইউসুফের সঙ্গে সমঝোতায় আসেন।১৯৪৪সালে ‘জোয়ারভাটা’ ছবি দিয়ে বলিউড চলচ্চিত্রে ইউসুফের অভিনয় জীবনে প্রবেশ। কিন্তু সে সময় ইউসুফ খান নামটি প্রবল বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিশিষ্ট হিন্দী লেখক ভগবতী চরণ শর্মা তাঁর নাম দেন দিলীপ কুমার। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হয়ে গেলে এই খান পরিবার আর পাকিস্তানে ফিরে যাননি। এর থেকে দেশপ্রেম আর কী হতে পারে?
চলচ্চিত্র প্রেমীদের কাছে মহম্মদ ইউসূফ খান দিলীপ কুমার নামেই জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন।আর তাকে ফিরেও তাকাতে হয়নি। ‘জগনু’ তাঁর বক্স অফিস হিট করা ছবি। এরপর মুঘল-ই-আজম, নয়াদায়র,দেবদাস,রাম আউর শ্যাম, আন্দাজ, মধুমতি, গঙ্গা যমুনা, ক্রান্তি, শক্তি, করমা, অন্তত ৬০-এরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন।তাঁর অভিনীত বিখ্যাত বাংলা ছবি সাগিনা মাহাতো। ১৯৯৮ সালে শেষবার তিনি ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৬৬সালে তিনি এক অভিজাত মুসলিম পরিবারের সদস্য্য অভিনেত্রী সায়রা বানুকে বিয়ে করেন। আটটি ফ্লিম ফেয়ার জিতে তিনি গিনেসবুকে রেকর্ড করেন।পদ্মভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, পদ্মবিভূষণ,নিশান-ই-পাকিস্তান, পুরস্কার লাভ করেন।তাঁর অভিনয়ের মধ্যে আবেগের থেকে বাস্তবতা ছিল বেশি। তাই তিনি ছিলেন একজন কিংবদন্তী অভিনেতা।তাঁর মৃত্যুতে উপমহাদেশ হারালো এক গর্বিত সন্তানকে।
তিনি প্রমাণ করেছেন যোগ্যতা থাকলে তাকে কেউ আটকাতে পারবে না।পেশোয়ারের ভূমিপুত্র হয়েও দেশে কিন্তু আর ফিরে যাননি। দিলীপ কুমার যেন একটি যুগ।
খুলনা গেজেট/এনএম