তাপদাহে ইউরোপে প্রায় ২৩ হাজার মানুষের মৃত্যু।
২০২২ সালের গ্রীষ্মে কেবল তাপদাহজনিত কারণে ইউরোপে মৃত্যু হয়েছে ২২ হাজার ৭৯২ জন মানুষের। আন্তর্জাতিক জলবায়ু গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিয়েশেন গ্রুপ (ডব্লিউডব্লিউএজি) তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।
মৃতদের সবাই ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন এবং ব্রিটেনের। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ মারা গেছেন ফ্রান্সে— ১০ হাজার ৪২০ জন। এছাড়া স্পেনে ৪ হাজার ৬৫৫ জন, জার্মনিতে ৪ হাজার ৫০০ জন এবং ব্রিটেনে ৩ হাজার ২৭১ জন মানুষের মৃত্যুর কারণ ইউরোপে ২০২২ সালের গ্রীষ্মের দীর্ঘ তাপপ্রবাহ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি গ্রীষ্মে ইউরোপজুড়ে যে দীর্ঘ তাপদাহ দেখা দিয়েছিল, তা কার্যত জলবায়ুর পরিবর্তন ছাড়া অসম্ভব।
এর আগে ২০০৩ সালে তাপদাহ জনিত কারণে ইউরোপে মৃত্যু হয়েছিল ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এবং এই মৃতদের অধিকাংশই ছিলেন ফ্রান্সের। মূলত তারপর থেকেই তাপপ্রবাহের লক্ষণ দেখা গেলে পূর্বাভাস ও সতর্কবার্তা দেওয়ার নিয়ম চালু হয় ফ্রান্স ও ইউরোপের অন্যান্য দেশে। ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রক (এসি) বসানোও শুরু হয় ২০০৩ সালের পর থেকে।
বিশ বছর আগের সেই দুর্যোগ থেকে ‘শিক্ষা নেওয়ার’ কারণে চলতি বছরের তাপদাহে মৃতের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম, কিন্তু তারপরও যতসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে ২০২২ সালে— তা রীতিমতো উদ্বেগজনক বলে মনে করেন ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিয়েশন গ্রুপের গবেষকরা।
অস্ট্রিয়ার গ্রাজ বিশ্বাবদ্যিালয়ের জলবায়ুবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক এবং ডব্লিউডব্লিউএজির গবেষকদলের সদস্য ক্লোয়ে বিমিকম্বে রয়টার্সকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমার জানামতে, ২০০৩ সালের পর ইউরোপে সবচেয়ে ব্যাপক ও দীর্ঘমেয়াদী তাপপ্রবাহ চলেছে ২০২২ সালের গ্রীষ্মে।’
অসহনীয় গরম পড়লে অনেকে ‘হিটস্ট্রোকে’ আক্রান্ত হন। হিটস্ট্রোক হলে মস্তিষ্ক, কিডনিসহ অন্যান্য অভ্যন্তরীণ প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া হিটস্ট্রোকে হলে তাৎক্ষণিকভাবে সঙ্গে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়া (হার্ট অ্যাটাক) কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়াও বেশ স্বাভাবিক ব্যাপার।
ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিয়েশেন গ্রুপের গবেষণা প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, হিটস্ট্রোক এবং তার পরবর্তী বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার ফলেই মারা গেছে এই ২২ হাজার ৭৯২ জন মানুষ।