২০১৪ সালে জার্মানিকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ জোয়াকিম লো এই বছরই দায়িত্ব ছাড়ছেন। গত বছরের স্থগিত ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ হবে আগামী জুনে। এই টুর্নামেন্ট শেষে জার্মানির সঙ্গে ১৭ বছরের সম্পর্কের ইতি টানবেন তিনি।
নিজেদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই খবর দিয়েছে জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ডিএফবি), ‘২০২১ সালের গ্রীষ্মে আসন্ন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ শেষে জোয়াকিম লোক জাতীয় দলের কোচের চাকরি ছেড়ে দেবেন।’
২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি ছিল লোর। কিন্তু তিনি আগেভাগে চলে যেতে চান বলে শীর্ষ ফুটবল সংস্থা জানিয়েছে, ‘ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় দলের কোচ তার চুক্তিতে ইতি টানতে চেয়েছেন, যা আসলে ছিল ২০২২ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত। জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাতে সম্মতি দিয়েছে।’
২০০৪ সালে ইউরোর গ্রুপ পর্বে জার্মানির বিদায়ের পর রুডলফ ভোয়েলারের উত্তরসূরি হন ইয়ুর্গেন ক্লিন্সম্যান। সহকারী কোচ হিসেবে তিনি সঙ্গে করে নিয়ে আসেন লোকে। দুজনের আক্রমণাত্মক ফুটবল দর্শনে দাপট দেখাতে শুরু করে জার্মানরা। ২০০৫ সালের ফিফা কনফেডারেশন্স কাপ ও ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে খেলে তারা।
ক্লিন্সম্যান চুক্তি নবায়ন না করলে লো প্রধান কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন ২০০৬ সালে। তার অধীনে ২০০৮ সালের ইউরো ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে রানার্সআপ হয় জার্মানি। ১৯৩৪ সালের পর সর্বকনিষ্ঠ দল নিয়ে ২০১০ সালের বিশ্বকাপে নেমেও বাজিমাত করেন লো, তৃতীয় হয় জার্মানরা।
অবশেষে ধরা দেয় বিশ্বকাপ শিরোপা, ২০১৪ সালে দাপট দেখিয়ে ফাইনালে ওঠে এবং অতিরিক্ত সময়ের গোলে আর্জেন্টিনাকে ১-০ তে হারিয়ে জার্মানিকে চতুর্থবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বানান। ২০১৭ সালে প্রথম কনফেডারেশন্স কাপ জেতালেও ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন লো। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা বিদায় নেয় গ্রুপ পর্বেই, যে অভিজ্ঞতাটা তাদের হয়েছে ১৯৩৮ সালের পর প্রথমবার।
১৭ বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে দারুণ উত্থান হলেও শেষটা যুতসই হয়নি। গত বছর উয়েফা নেশনস লিগে স্পেনের কাছে ৬-০ গোলে হার মানে লোর জার্মানি, ১৯৩১ সালের মের পর এটাই ছিল সবচেয়ে বড় ব্যবধানে পরাজয়।
লো বলেছেন, ‘আমি খুব সতর্কতার সঙ্গে এই পদক্ষেপ নিয়েছি, অনেক গর্ব আর বুকভরা কৃতজ্ঞতা নিয়ে। একই সময়ে আমি খুব উজ্জীবিত কারণ সামনে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ আছে। গর্বের কারণ এটা খুব বিশেষ কিছু এবং আমার দেশের জন্য কিছু করা সম্মানের। প্রায় ১৭ বছর ধরে দেশের সেরা ফুটবলারদের সঙ্গে কাজ করাও বিরাট পাওয়া।’
জার্মানি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন লো, ‘তাদের (জার্মানি) সঙ্গে আমার দারুণ বিজয় ও বেদনাদায়ক হারের অভিজ্ঞতা হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা অনেক বিস্ময়কর ও জাদুকরী মুহূর্ত ছিল- সেটা শুধু ব্রাজিলে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জেতাই নয়। ডিএফবির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ আছি এবং থাকবো, যারা আমাকে ও দলকে সবসময় আদর্শ কাজের পরিবেশ দিয়েছে।’
খুলনা গেজেট/কেএম