ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে দুস্থদের জন্য ভিজিডি কর্মসূচিতে উপকারভোগী নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রামীণ দু:স্থ মহিলাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকারের অন্যতম সামাজিক নিরাপত্তামূলক এ কর্মসুচিতে নিজেদের স্ত্রী-কন্যা ও পরিবারের সদস্যদের নামে প্রতিমাসে ভিজিডির ৩০ কেজি করে চাল তুলছেন কয়েকজন ইউপি সদস্য। ফলে অসহায়দের জন্য সরকারের এ সহায়তা থেকে বঞ্চিত দু:স্থ মহিলাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমন অভিযোগ উপজেলার ৭ নং রঘুনাথপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইদুল ইসলাম, ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য আতিয়ার রহমান ও ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য বসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভিজিডি কর্মসূচির উপকারভোগী নির্বাচনে ওই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইদুল ইসলামের স্ত্রী সাবানা খাতুন উপকারভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন, যার কার্ড নং- ১৯৭। ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য আতিয়ার রহমানের কন্যা বীথি খাতুন ভিজিডির ৩০ কেজি চাল নিচ্ছেন ৯৮ নং কার্ডের মাধ্যমে। একই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য বসির উদ্দিনের ভাই নাসির উদ্দিনের স্ত্রী হাসিয়া খাতুনও নিচ্ছেন হতদরিদ্রদের ৩০ কেজি চাল। তার কার্ড নং ১৪০।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রামীণ দু:স্থ মহিলাদের জন্য সরকারের এই মহৎ কর্মসূচিতে নিজেদের স্ত্রী কন্যা আর পরিবারের সদস্যদের নামে ৩০ কেজি চাল উত্তোলন করছেন বিত্তবান ইউপি সদস্যরা। যা নিয়ম বহির্ভুত। তাদের এমন কর্মকান্ডে সাধরণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ওই ইউনিয়নের মান্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে নিজের স্ত্রীর নামে ভিজিডির ৩০ কেজির চাল নেন ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম। তিনি সমাজে বিত্তবান হিসেবে পরিচিত। আবার ইউপি সদস্য বসির উদ্দিন তার ভাই নাসির উদ্দিনের স্ত্রী হাসিয়া খাতুনের নামেও তুলছেন ওই ৩০ কেজি চাল। ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমানের কন্যা বীথি খাতুনের বিয়ে হয়েছে প্রায় দেড় বছর আগে। তিনি কুমিল্লা জেলায় স্বামী সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন। কন্যার নামে ভিজিডির ৩০ কেজির চাল নেন ওই ইউপি সদস্য।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম জানান, তিনি একজন অসহায় ও দু:স্থ মানুষ হিসেবেই নিজের স্ত্রীর নামে প্রতিমাসে ভিজিডির ৩০ কেজি চাল নেন। তিনি এ কর্মসূচিতে কোন অনিয়ম করেননি বলে দাবি করেন।
ইউপি সদস্য বসির উদ্দিন অনিয়মের বিষয় স্বীকার করে বলেন, তিনি তার ভাইয়ের স্ত্রীর নামে ভিজিডির ওই ৩০ কেজির চাল উত্তোলন করে অসহায়দের মাঝে বিতরণ করেন। এমন অনিয়ম আরও আছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল বলেন, বিষয়টি খুবই দু:খজনক। যখন উপজেলা কমিটি থেকে তালিকা চাওয়া হয় তখন প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্যদের কাছ থেকে দুস্থদের নামের তালিকা নেওয়া হয়। ওই সদস্যরা তালিকায় তাদের পরিবারের সদস্যদের নাম দিয়েছেন যেটা তিনি পরে জেনেছেন। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নিতে উপজেলা কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি ও ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।