ইউক্রেন সংকটে রাশিয়াকে এড়িয়ে মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অবস্থানের কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের পার্লামেন্ট ন্যাসেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক ও প্রতিরক্ষা পরিষদের চেয়ারম্যান র্যাম বেন-বারাক স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘১০৩ এফ রেডিও স্টেশন’কে এই তথ্য দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম হেরাটজের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে মিডল ইস্টার্ন আইস।
দেশটির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমাদের যদি কোনো পক্ষ নিতে হয় তবে অবশ্যই আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকব। ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তবে এর নেতিবাচক প্রভাব ইসরায়েলের ওপরও পড়বে।’
ইসরায়েলের পরিবহনমন্ত্রী মেরাভ মাইকেল বলেন, ‘অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে সেই ধরনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নেই আমাদের।’
প্রবাসী বিষয়ক মন্ত্রী নাচম্যান সাই সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২-কে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সংযোগ রয়েছে। আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে। আমরা প্রত্যাশা করি, কোনো ধরনের গোলাবর্ষণ ও সম্মুখযুদ্ধ ছাড়াই ইউক্রেন সংকটের সমাধান হবে।’
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা শক্তির জোট ন্যাটোতে যোগ দেয়া থেকে ঠেকাতে মুখোমুখি অবস্থানে দুই পরাশক্তি ওয়াশিংটন ও মস্কো।
এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে বেকায়দায় পড়ে যায় ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র হলেও রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে ঐতিহ্যগতভাবেই সুসম্পর্ক রয়েছে বিশ্বরাজনীতিতে প্রভাবক তেল আবিবের।
২০১৯ সালে ইসরায়েল ও ইউক্রেন সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি সই করে। সেই বছর ডিসেম্বরে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকজাই রেজনিকভ ইসরায়েল সফরে যান।
এই সংকট সহিংস সংঘাতে রূপ নিলে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ নেতারা।
তেল আবিবের সরকারি পরিসংখ্যান মতে, দেশটিতে ৫ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় নাগরিক ও ৪ লাখের বেশি রুশ নাগরিক বসবাস করেন।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লেপিড এই সংকটে আরও সহনশীল প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, ইউক্রেন সংকট নিয়ে তেল আবিবকে আরও সতর্ক অবস্থান নিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্যগতভাবে আমরা আমেরিকানদের সঙ্গে থাকব। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, রাশিয়া ও ইউক্রেনে অনেকসংখ্যক ইহুদি রয়েছেন।’
ইসরায়েলের এমন বিমাতাসুলভ আচরণে হতাশা প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। একই সঙ্গে ইউক্রেন থেকে ইসরায়েলের নাগরিক সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে রাশিয়ার সহায়তা চাওয়ার তেল আবিবের সমালোচনা করেছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ।
সেই সঙ্গে এই ঘটনায় কারণ দর্শানোর জন্য কিয়েভে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে কিয়েভ।
খুলনা গেজেট/ এস আই