ইউক্রেনে সামরিক অভিযানকে ‘অপরাধ’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করেছেন জাতিসংঘের জেনেভায় নিযুক্ত রুশ কূটনীতিক বরিস বোনদারেভ। সেই সঙ্গে ইউক্রেনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘আগ্রাসী আচরণের’ সমালোচনা করে বিদেশি সহকর্মীদের কাছে একটি বিবৃতিও পাঠিয়েছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন,অন্যান্য দিনের মতো সোমবার (২৩ মে) সকালে আমি অফিসে যাই এবং পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে চলে এসছি। খবর আল-জাজিরা।
জেনেভায় বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক মিশনে পাঠানা ওই বিবৃতিতে তিনি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছেন এবং নিজ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কটাক্ষ করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমি কূটনৈতিক ক্যারিয়ারের দীর্ঘ বিশ বছরে আমাদের পররাষ্ট্র নীতির বিভিন্ন মোড় দেখেছি, কিন্তু চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় আমার দেশের জন্য কখনো এতটা লজ্জিত হইনি। ’
তারিখটি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনকে নির্দেশ করে, যা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পুতিন যে আগ্রাসন শুরু করেছেন, তা প্রকৃতপক্ষে সমগ্র পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধেই যুদ্ধা। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র ইউক্রেনের জনগণের বিরুদ্ধেই অপরাধ করা হচ্ছে না, সম্ভবত, রাশিয়ার জনগণের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অপরাধ করা হচ্ছে। ’
৪১ বছরের বোন্ডারেভ জানিয়েন, তিনি দুই দশক ধরে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করেছেন এবং ২০১৯ সাল থেকে জেনেভায় দেশটির মিশনে পরামর্শদাতা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ইউক্রেনে সেনা অভিযানের প্রতিবাদে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচনা করে একজন শীর্ষ রুশ কূটনীতিকের এই পদত্যাগ একটি বিরল ঘটনা। কারণ দেশটিতে সরকারের সমালোচনা এবং ভিন্নমতকে কঠোরভাবে দমন করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেছেন, যারা এই যুদ্ধের পক্ষে রয়েছেন, তারা শুধু একটা জিনিসই চান, আর তা হলো সারা জীবনের জন্য ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা, জমকালো প্রাসাদে বসবাস করা, প্রমোদতরিতে করে ঘুরে বেড়ানো এবং অসীম ক্ষমতা ও তাদের কাজের জন্য পুরোপুরি দায়মুক্তি উপভোগ করা।