ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান গড়িয়েছে চতুর্থ মাসে। কিয়েভের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, এভাবে চলতে থাকলে ‘যুদ্ধের ক্লান্তি’ থেকে একসময় ইউক্রেনকে সহায়তার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে পশ্চিমা দেশগুলো।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইউক্রেনকে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র দিয়েছে। যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে তারা। আর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন ঐক্য দেখিয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইউরোপ।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে এ যুদ্ধ চলতে থাকলে তা ধীরে ধীরে ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমাদের সমর্থন কমিয়ে আনতে পারে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আপসের জন্য ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে রাশিয়া। খবর আল-জাজিরার।
কিয়েভকে কিছু ক্ষেত্রে আপসে আসা উচিত, ইতোমধ্যেই পশ্চিমাদের এমন পরামর্শে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এদিকে পুরো ইউক্রেনজুড়ে অন্তত ৪৬টি জৈব পরীক্ষাগারে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিগত দুই দশক ধরে এ পরীক্ষাগারগুলো ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ। যদিও এসব পরীক্ষাগারে স্বাস্থ্যসেবা ও রোগ নির্ণয়ের কাজ চলছিল বলে দাবি করেছে বাইডেন প্রশাসন।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পরই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দেশটিতে জৈব গবেষণাগারে পরীক্ষা চালানোর অভিযোগ আনে রাশিয়া। এসব গবেষণাগারে জৈব বা রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র গোপনভাবে অর্থায়ন করছে বলেও সেসময় দাবি করে মস্কো।
এমনকি খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে জৈব অস্ত্রখাতে বিনিয়োগের অভিযোগ ওঠে। যদিও সেসব অভিযোগ এতদিন অস্বীকার করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে এবার ইউক্রেনে জৈব পরীক্ষাগারে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে মার্কিন প্রশাসন।
এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, ইউক্রেনজুড়ে ৪৬টি জৈব পরীক্ষাগার পরিচালনা করছিল ওয়াশিংটন। তবে এগুলোতে কোনো জীবাণু নিয়ে গবেষণা কিংবা রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছিল না। কেবল স্বাস্থ্যসেবা ও রোগ নির্ণয় করতেই গবেষণাগারগুলো ব্যবহার করা হতো।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ প্রকাশিত রিপোর্টের সমালোচনা করেছে চীন। এক সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, প্রতিবেদনে জৈব পরীক্ষাগার সম্পর্কে যতটুকু তথ্য দেয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। গবেষণাগারগুলোতে জীবাণু বা জৈব অস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হচ্ছিল কিনা, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন।
খুলনা গেজেট/ এস আই