আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে সরকার আন্তর্জাতিকভাবে কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আশা করে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রবিবার (১১ মে) আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কেমন হবে জানতে চাইলে বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে প্রেস সচিব বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বিশ্বের কোথাও এমন একটি খুনি, গণতন্ত্রবিরোধী ও দুর্নীতিগ্রস্ত দলের পক্ষে কেউ কথা বলবে না। তাই, আমরা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিকভাবে কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আশা করি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা নিয়ে বিশ্ব শোক প্রকাশ করবে বলে আমি মনে করি না।’
এর আগে, শনিবার রাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে প্রকাশ করা হবে।
আইন উপদেষ্টার কথার পুনরাবৃত্তি করে প্রেস সচিব বলেন, ‘পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোতেও মানবতাবিরোধী অপরাধ বা জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপের জন্য কেবল কোনো দলের কার্যক্রম নয়, পুরো রাজনৈতিক দলকেই নিষিদ্ধ করতে দেখেছি।’
উদাহরণস্বরূপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি ও ইতালিতে নাৎসি ও ফ্যাসিস্ট দলগুলো নিষিদ্ধ করার কথা উল্লেখ করেন শফিকুল আলম। এ ছাড়াও স্পেন ও বেলজিয়ামে কিছু দল বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রমের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিএইচআর) প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগ, দলটির নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল বলে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’
তাছাড়া এই দলটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাপকভাবে ধ্বংস করেছে, নেতাকর্মীরা বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দীর্ঘ বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনীও অনুমোদিত হয়েছে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।
এর আগে শুক্রবার সরকার জানিয়েছিল, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোর বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে সংশোধনী আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম