ভারতের আসাম রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে রাজ্যের ৩৩টি জেলায় বন্যা ছড়িয়ে গেছে এবং ৪২ লাখের বেশি মানুষ এ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এ বন্যার কারণে আরও ৩ শিশুসহ ৯ জন মারা গেছে। চলতি বছরে বন্যায় সবমিলিয়ে আসামে ৭১ জন মারা গেছেন।
আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজম্যান্ট অথরিটির দৈনিক বন্যা প্রতিবেদন অনুসারে, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিধসে ৬ জন ও ডুবে মারা গেছেন ৩ জন।
নিহতদের মধ্যে কাছাড়ে ১ শিশুসহ ৩ জন, বরপেটাতে ১ শিশুসহ ২ জন এবং বাজালি, কামরুপ, করিমগঞ্জ ও উদালগুড়ি জেলায় ১ জন করে মারা গেছেন। এ ছাড়া ৫ জেলায় আরও ৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে বজ্রঝড়, বজ্রসহ বৃষ্টি এবং বিভিন্ন স্থানে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টি হতে পারে, এরপরে বৃষ্টির তীব্রতা কমতে পারে।
বর্তমানে রাজ্যটির ৫ হাজার ১৩৭টি গ্রাম পানির নিচে এবং প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজম্যান্ট অথরিটি জানিয়েছে, বন্যা মোকাবেলায় ২৭টি জেলায় ১ হাজার ১৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭২২ শিশুসহ ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪২৪ জন আশ্রয় নিয়েছে। বন্যাকবলিত অঞ্চল থেকে ৮ হাজার ৭৬০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আসামের পানি সম্পদমন্ত্রী পীযুশ হাজারিকা বলেছেন, পরিস্থিতি খুব কঠিন। আমরা মানুষকে সাহায্যের জন্য জোর চেষ্টা করছি। বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের কাছে পৌঁছাতে অস্থায়ী সেতু বানানো হয়েছে।
বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজন না হলে বা কোনো চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে আসামের রাজধানী গুয়াহাটির বেশির ভাগ অংশ স্থবির হয়ে পড়েছে। এ শহরেও বেশ কয়েকটি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
আসামে এক দিনে ৮১১.৬ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ডের দুই দিন পরই শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে ৯৭২ মিলিমিটার, যা ১৯৯৫ সালের জুন মাসের পর থেকে সর্বোচ্চ এবং ১২২ বছরের মধ্যে আসামের তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।